বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতার (Kolkata) ট্যাংরা কাণ্ডে এবার হাতে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে আত্মহত্যা নয় খুন হয়েছেন একই পরিবারের তিন জন সদস্য। জানা যাচ্ছে দুই-জায়ের হাতের কব্জিতে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন মিলেছে। অন্যদিকে নাবালিকার শরীরেও একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ট্যাংরা কাণ্ডের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য (Kolkata)
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে গৃহবধূ রোমি দে-এর দু’হাতের-ই কব্জি কাটা ছিল। তাঁর গলাতেও বাঁ দিক থেকে ডান দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা দেখে অনুমান করা হচ্ছে তাঁর গলায় কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। অন্যদিকে অপর গৃহবধূ সুদেষ্ণা দে-এর-ও দু হাতের কব্জি কাটা ছিল। জানা যাচ্ছে তাঁর দুই- হাতের কব্জির প্রধান শিরাগুলি কাটা ছিল। গলাতেও মিলেছে গভীর ক্ষতচিহ্ন। জানা যাচ্ছে প্রবল রক্তক্ষরণের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ভয়য়ঙ্কর তথ্য মিলেছে নাবালিকা প্রিয়ংবদার ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও। জানা যাচ্ছে তাঁর হাতে ও পায়ে কালশিটের দাগ রয়েছে। এছাড়া পেটে যে খাবারের নমুনা মিলেছে তা পুরোপুরি হজম হয়নি। ওই খাবারের রং ছিল হলুদ-সাদাটে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাতে ওষুধের গন্ধও পাওয়া গিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে বিষক্রিয়া থেকেই ওই নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। জানা যাচ্ছে শেষ খাবার খাওয়ার ৩-৬ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ময়নাতদন্ত হওয়ার ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগেই ওই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্যাংরাকাণ্ডে নতুন মোড়! ‘মেরে ফেলেছে মেয়েকে’, খুনের মামলা রুজু করল পরিবার
ট্যাংরা কাণ্ডে এবার পুলিশের হাতে এল আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘুমের মধ্যেই খুন হয়েছেন রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে। ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ঘুমন্ত অবস্থাতেই অত্যন্ত নিখুঁতভাবে তাঁদের হাতের শিরা কাটা হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দুই গৃহবধূ ঘুমিয়ে ছিলেন অথবা অচেতন অবস্থায় ছিলেন বলেই এত ‘নিখুঁত ভাবে’ তাঁদের হাতের শিরা কাটা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক ময়না তদন্তের পর অনুমান করা হচ্ছে হাতের শিরা কাটার পাশাপাশি গলায় আঘাত করে খুন করা হয়েছে তাঁদের। অন্যদিকে ১৪ বছরের প্রিয়ম্বদার মৃত্যু হয়েছিল খাবারে বিষক্রিয়ার ফলেই।
জিজ্ঞাসাবাদের পর দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূন পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের নাকি কোটি কোটি টাকার ঋণ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর ৬ ব্যাঙ্ক এবং সংস্থার কাছ লোন নিয়েছিলেন তাঁরা। সেই ঋণ শোধ করার ক্ষমতা ছিল না তাঁদের। এমনকি, ট্যাংরার ওই চারতলা বাড়িটিও নাকি বন্ধক রেখেছিলেন দুই ভাই। তাঁরা বয়ানে জানিয়েছেন কিশোরকে হাসপাতালে ড্রপ করে সুইসাইড করার চিন্তাভাবনা ছিল তাঁদের। কিন্তু বাচ্চা ছেলেটি নাকি রাজি হয়নি।সিসিটিভি ফুটেজে মঙ্গলবার রাত ১২টার পর কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা গিয়েছে প্রণয় এবং প্রসূনকে। এরপর বুধবার অভিষিক্তা মোড়ের কাছে তাঁদের গাড়ি একটি পিলারে ধাক্কা মারে। প্রণয়দের দাবি, আত্মহত্যার করার জন্যই তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবে পিলারে ধাক্কা মেরেছিলেন। তবে তদন্তকারীদের তাঁদের বয়ান নিয়ে সন্দেহ আছে।