বাংলাহান্ট ডেস্ক: একটানা ৫৭৪ দিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন চাকরীপ্রার্থীরা। বছর ঘুরে গিয়েছে, একের পর এক উৎসব গিয়েছে। দূর্গাপুজোর আনন্দ পেরিয়ে লক্ষ্মীপুজোও হয়ে গেল। কিন্তু ওদের জীবনে আনন্দ, উৎসব অনেক দিন আগেই বিদায় নিয়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরী না পাওয়ার যন্ত্রণা কুরে কুরে খাচ্ছে প্রতিদিন। সরকারের কাছে হাজারো আবেদন বৃথা গিয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর শুভ দিনে সপরিবারে আন্দোলনকারীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন কৌশিক সেন (Koushik Sen)।
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করে চলেছেন চাকরীপ্রার্থীরা। এদিন তাঁদের আন্দোলনে গিয়ে যোগ দেন অভিনেতা কৌশিক সেন, স্ত্রী অভিনেত্রী রেশমি সেন, ছেলে ঋদ্ধি এবং হবু বউমা সুরঙ্গনা। সঙ্গে মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। নিজেদের প্রাপ্যর লড়াইতে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন কৌশিক সেনরা।
সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অভিনয় সূত্রে তাঁর বন্ধু। তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন। তবে যথাযথ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে একজন বন্ধু এবং সর্বোপরি একজন নাগরিক হিসাবে তিনি আবেদন করবেন, বঞ্চিত প্রার্থীদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে যেন চাকরী দেওয়া হয়। সঙ্গে তিনি আরো বলেন, কার্নিভ্যালের জন্য অবস্থান সরিয়ে পুলিসের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন চাকরীপ্রার্থীরা, তেমনি সরকারেরও উচিত প্রতিশ্রুতি পালন করা।
এদিন ধর্নামঞ্চে প্রতীকি লক্ষ্মীপুজো পালন করেন চাকরীপ্রার্থীরা। লক্ষ্মী ঠাকুর সেজে, প্রতিমা হাতে নিয়ে প্রতিবাদ করেন তাঁরা। চাকরীপ্রার্থীরা বলেন, তাঁরাও কোনো না কোনো ঘরের লক্ষ্মী। কিন্তু এখন তাঁদের অবস্থা হতচ্ছাড়া লক্ষ্মীর মতো। ঘরের লক্ষ্মী ঘরে ফিরতে চায় এবার।
গতকাল কার্নিভ্যালে অনেক তারকা আসলেও দেখা মেলেনি কৌশিক সেনদের। এদিন চাকরীপ্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোস্ট করেছেন ঋদ্ধি। লিখেছেন, ‘কাল ছিল কার্নিভাল l আজ লক্ষ্মীপুজো l না , এটা কার্নিভালের দৃশ্য না , লক্ষ্মীপুজোরও না l এখানে ঢাকের আওয়াজ আসেনা , আসেনা হাজার হাজার ওয়াটের আলোর রোশনাই , পড়েনা লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ , দেখা যায়না তারকাদের উল্লাস বা ঢাকের তালে মৃদু ছন্দে নাচ l
ইউনেস্কো হেরিটেজের স্বীকৃতির ছোঁয়া মেটাতে পারেনি খিদের জ্বালা l ৫৭৪ দিন সম্পূর্ণ হলো এই প্রতিবাদ সভার , ইউনেস্কো হেরিটেজের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আমাদের শহরের কি হবে জানি না কিন্তু শহরের বুকে এই মানুষগুলির অক্লান্ত ধৈর্য আর প্রতিবাদ হেরিটেজ হয়ে থেকে যাবে , এটা থাকবে ইতিহাসের অংশ হয়ে , যা আগামী প্রজন্মকে প্রশ্ন করার , রুখে দাঁড়ানোর সাহস দেবে।’