বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় বারো মাসে তেরো পার্বণে মেতে ওঠে সকল বাঙালি আর সেই উৎসব উপলক্ষ্যেই খড়, মাটি এবং একাধিক সামগ্রী দিয়ে অভিনব শিল্পের ছোঁয়ায় একের পর এক প্রতিমা গড়ে চলে শিল্পীরা। এক্ষেত্রে কুমোরটুলির নামই আমাদের মাথায় সর্বপ্রথম উঠে আসে। তবে শুধুমাত্র বাংলা নয়, বিদেশের একাধিক প্রান্ত জুড়েও বর্তমানে তাদের হাতের জাদু ছড়িয়ে রয়েছে। একাধিকবার বিদেশ থেকে ডাক পাওয়ায় সেখানে পাড়ি দিতেও দেখা যায় কুমোরটুলি শিল্পীদের। তবে এবার তাদের সেই বিদেশ যাত্রার প্রসঙ্গ অতীতের তুলনায় যথেষ্ট আলাদা এবং তাৎপর্যপূর্ণ! আমাদের বাঙালি শিল্পীদের তৈরি কালী প্রতিমা এবার স্থান পেতে চলেছে লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে।
আগামী 17 ই মে ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে চলেছে সকলে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, আগামী 17 তারিখ একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ব্রিটিশ মিউজিয়াম, যেখানে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত চিত্র তুলে ধরা হবে। গডেস ফিমেল পাওয়ার ইন ওয়ার্ল্ড বিলিফ নামক এই প্রদর্শনীতে গ্রিসের শিল্পের দেবী এথেনা এবং মিশরের যুদ্ধের দেবী সেখমেতের মূর্তির পাশাপাশি এখানে জায়গা করে নিয়েছে বাংলার কুমোরটুলির শিল্পীদের দ্বারা নির্মিত কালী প্রতিমা।
বিগত 50 বছরের উপর সময় ধরে ইউরোপে দুর্গা পুজোর আয়োজন করে চলেছে ক্যামডেন দুর্গাপূজা কমিটি। তাদের সঙ্গেই সর্বপ্রথম যোগাযোগ গড়ে তোলে ব্রিটিশ মিউজিয়াম সংস্থা এবং তাদের মাধ্যমেই শেষপর্যন্ত কুমোরটুলির শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। এ বিষয়ে ক্যামডেন দূর্গাপূজা কমিটির প্রধান ডা. আনন্দ গুপ্ত বলেন, “আমরা আগামী 17 তারিখ একটি ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে চলেছি। এরকম এক উদ্যোগের পাশে আমরা যে রয়েছি, তা ভেবে অত্যন্ত গর্ব হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, মিউজিয়ামে স্থান পেতে চলা এই কালী প্রতিমাটি তৈরি করেছেন কুমোরটুলির শিল্পী কৌশিক ঘোষ। কালো রঙের এই কালী মূর্তির হাটু পর্যন্ত মুণ্ডমালা দুলতে দেখা যাবে এবং এটির পায়ের নিচে রয়েছেন স্বয়ং ভগবান শিব। প্রায় দেড় মাস ধরে তৈরি এই মূর্তির ওজন 35 কিলো বলে জানা গিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাঙালি অপর এক গর্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্য গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হতে চলেছে এবং এর নির্দেশনায় রয়েছেন আনন্দ গুপ্ত।