বাংলাহান্ট ডেস্ক : রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে আবারও বড় মন্তব্য করতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। তাঁর দাবি রাজধর্ম পালন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রভাবিত করার অভিযোগ কার্যতই অমূলক। উলটে তাঁর পালটা অভিযোগ একসঙ্গে কাজ করছে সিবিআই এবং বিজেপি।
রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে কার্যতই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এই ইস্যুতে ক্রমাগত জলঘোলা হয়েই চলেছে। সেই সঙ্গে অব্যাহত রাজনৈতিক কাদা ছোঁড়াছুড়ি এবং অভিযোগ পালটা অভিযোগের তরজা। ওই গণহত্যা কাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদের এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সরকারি চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার তার পরই বিরোধীদের দাবি টাকা দিয়ে তদন্তকে প্রভাবিত করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইতিমধ্যেই বগটুই কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তাতেও ভোবি ভোলবার নয়। উলটে পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবীতে সরব বিজেপি। এরই মধ্যে এবার তার পালটা জবাব দিল ঘাসফুল শিবির। এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নয়, বিজেপি-ই তদন্ত প্রভাবিত করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দোষীরা কঠোর শাস্তি পাবে। তাদের যেন উপযুক্ত ধারা দেওয়া হয়। তার সঙ্গে তদন্তে প্রভাবের কী সম্পর্ক? যে কোনও নিরপেক্ষ সুস্থ প্রশাসক, পুলিশমন্ত্রী, তিনি তো এই কথাই বলবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোথাও কোনও অঘটন ঘটেছে, এই ধরনের মর্মান্তিক, পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে, গণহত্যা ঘটেছে, আর সেই ঘটনাস্থলে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নেই মুখ্যমন্ত্রী, একটা ছবি দেখান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর এক জনেরও ছবি দেখাতে পারবেন না। নন্দীগ্রামে মমতা ছিলেন, রামপুরহাটেও মমতা-ই আছেন। সে দিন নন্দীগ্রামে কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছিলেন না। এখানে কিন্তু বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম রামপুরহাটে গিয়েছিলেন। বাম আমলে একের পর এক গণহত্যা হয়েছে, কোথাও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী রাজধর্ম পালন করেননি। গুজরাতে দাঙ্গা হয়েছে, এত মানুষ মারা গিয়েছেন, অটলবিহারী বাজপেয়ীকে শেখাতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। বলতে হয়েছে রাজধর্ম পালন করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেখাতে হয় না।’
বিরোধীদেরও একহাত নিয়েছেন কুণাল, ‘সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেসের সমালোচনা করার অধিকার নেই। সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস তারা তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলার আগে একটা ছবি দেখাক, যেখানে তাদের জমানায় এরকম কোনও অনভিপ্রেত, পৈশাচিক ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে রাজধর্ম পালন করছেন।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদিনই বগটুই কাণ্ডে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব টেনেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। শিলিগুড়ির সরকারি একটি অনুষ্ঠান থেকে তিনি বলেন, ‘দেউচা পাঁচামি আটকাতে বগটুইয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। পুলিশকে দায়ী করা হচ্ছে। দেউচা পাঁচামি হলে বহু কর্মসংস্থান হবে। বাংলার আমূল পরিবর্তন হবে। তখন মানুষ কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। কারও কথায় কান দেবেন না। তাই বিরোধীরা খুন করে নজর ঘোরাচ্ছেন। দু’একটা দুষ্টু গরু সব জায়গায় থাকে। কিন্তু আমি মাফ করব না। এমন ঘটনা আমি কখনও মাফ করব না।’ কার্যতই এই সমস্ত মন্তব্য যে আরও ঘৃতাহুতি করেছে জল্পনার আগুনে তা বলাই বাহুল্য।