বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছিল সিনেমা, আর হয়ে গেল রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। দেব (Dev) ও মিঠুন (Mithun Chakraborty) অভিনীত ছবি ‘প্রজাপতি’ (Projapoti) মুক্তি পেয়েছে বেশ কিছুদিন। সমস্ত কল্পনা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ব্যাপক সাফল্য মিলেছে এই ছবিতে। পুরুস্কৃতও হয়েছে সিনেমা। তবে এখনও বিতর্ক পিছু ছাড়লনা এই ছবির। আর অবশেষে সেই বিতর্কের জল গিয়ে পৌঁছাল ব্যক্তিগত আক্রমণে। শুরু বিজেপির মিঠুন বনাম তৃণমূলের কুণাল।
এদিন দলীয় কর্মসূচিতে ত্রিপুরা সফরে যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) ‘এলিতেলি গঙ্গারাম’ বলে কটাক্ষ করেন। এরপরেই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। এবার এলিতেলি গঙ্গারামের জবাবে অতীতের বহু ঘটনার উল্লেখ করে তৃণমূল মুখপাত্রের দাবি, পূর্বে অভিনেতা মিঠুনকে অনেক কারণে তাঁর কাছে আসতে হয়েছিল। তবে এদিন নিজের কথায় মিঠুনকে ভাল অভিনেতা বলেও উল্লেখ করেন কুণাল ঘোষ।
দুই সুপারস্টার দেব ও মিঠুন অভিনীত ছবি ‘প্রজাপতি’র নন্দনে মুক্তির টিকিট না মেলাতেই শুরু হয় বিতর্ক। এরপরই ছবির প্রধান চরিত্র তথা সহ-প্রযোজক দেব আক্ষেপ করে টুইটে বলেন, ‘‘এ বার তোমায় মিস করব নন্দন। কোনও ব্যাপার নয়, আবার দেখা হবে। গল্প শেষ।’’ এরপরই এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ময়দানে নামে বঙ্গ বিজেপি। গেরুয়া দল অভিযোগ তোলে মিঠুন আছে বলেই নন্দনে স্থান পায়নি এই ছবি। এরপরেই কুণাল ঘোষ বলেন ,‘‘এই সিনেমায় দেবের অভিনয় দারুণ। বিশেষ করে এই যে বাবা-ছেলের রসায়ন। ‘টনিক’-এ দেব আর পরানবাবু ছিলেন। পরানবাবু সুপারহিট। আর এখানে ডুবিয়ে দিয়েছে মিঠুনদা। মিঠুনদাকে ১০ গোল দিয়ে দিয়েছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এই জায়গা থেকে ছবিটাকে টানার জন্য হয়তো কোনও বিতর্ক তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি।”
সুপারস্টার মিঠুনের অভিনয় সত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অভিনেতা মিঠুন মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও, চুপ করে থাকেননি তৃণমূল সাংসদ দেব। তিঁনি বলেন, ‘‘কুণালদা আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করেন। তবে একটাই কথা বলব, উনি রাজনৈতিক মুখপাত্র। আমার মনে হয় সিনেমা নিয়ে ওঁর পড়াশোনা নেই। আমি ওঁকে ছোট করে কিছু বলতে চাইছি না। যথেষ্ট সম্মাননীয় এক জন মানুষ। তবে আমি মনে করি, সিনেমাটা আমার উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’ তবে এরপর বিতর্ক আরও কিছুটা গড়ালেও শেষমেষ দেব জানান, এই বিষয় নিয়ে কুণালের সঙ্গে তাঁর যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝি কেটে গিয়েছে।
এরপরই এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে মিঠুন বলেন ‘‘চেয়েছিলিস তো আমার টিআরপি নামাতে, মরা অব্দি পারবি না।’’ এটা কি কুণাল সম্পর্কে বললেন? সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে মিঠুন বলেন, ‘‘এলিতেলিদের আমি জবাব দিই না, ও সব গঙ্গারামদের আমি জবাব দিই না।’’ এরপরই এর পাল্টা উত্তর দিতে গিয়ে কুণাল দাবি করেন রাজনৈতিক ও অভিনয়, উভয় কারণেই বহুবার মিঠুন তাঁর সাহায্য নিয়েছেন। পাশাপাশি তিঁনি বলেন, ‘‘আজ যাঁকে উনি এলিতেলি গঙ্গারাম বলছেন তাঁর সঙ্গে কেমন যোগাযোগ ছিল তিনি তা নিজে ভাল করে জানেন। আমি এখনও বলছি, ওই চরিত্রটায় পরান বন্দ্যোপাধ্যায় ঢের ঢের ভাল অভিনয় করতেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মিঠুনদা যে ভাল অভিনেতা তা তো অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু ভাল অভিনেতা মানেই সব ছবি হিট করবে তা তো বলা যায় না। যদি টিআরপি-র কথা উনি বলেন, তবে ক’টা ছবি করেছেন আর ক’টা হিট তার হিসাব করলেই বোঝা যাবে।’’
শেষে ‘এলিতেলি গঙ্গারাম’ মন্তব্যের জবাবে কুণাল বলেন, ‘‘ওঁকে এই এলিতেলি গঙ্গারামের সঙ্গে গিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ঝামেলা মেটাতে হয়েছিল। এর সঙ্গে গিয়েই সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে দূরত্ব মেটাতে হয়েছিল। এর সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েই পদ্মশ্রীর সুপারিশ পাঠাতে হয়েছিল, উনি তো নিজেকে সাপ বলেন। সাপের মতোই উনি মরসুমে মরসুমে খোলস বদলান।’’