অতীতেও তিনি ছিলেন তৃণমূল দলের ঘনিষ্ঠ আর বর্তমানেও রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্র এই বিশিষ্ট সাংবাদিক; তিনি কুণাল ঘোষ। তবে অতীত ও বর্তমানের মাঝের সময়টি একদমই মধুর ছিলোনা তাঁর। সারদা আর্থিক প্রতারণার মামলায় জেল পর্যন্ত খাটতে হয় কুণালকে। আর সেই জেল হেফাজতে থাককালীন এক ঘটনা নিয়েই পুনরায় একবার বিতর্ক সৃষ্টি হলো এদিন।
প্রসঙ্গত, সারদা মামলায় বহুদিন জেল খাটতে হয় কুণাল ঘোষকে। এই সময়কালেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে বসেন তিনি। হেফাজতে থাকাকালীনই 2014 সালের 13 ই নভেম্বর ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা। যদিও সেই সময় জেল কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগকে অস্বীকার করে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে কুণালের মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধরা পড়ে আসল সত্য। চিকিৎসকদের মতে, সেই সময় টেস্টের রেজাল্টে কুণালের পেটে ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায়। আর এদিন সেই মামলারই রায়দান দিলো বিচারক মনোজিৎ ভট্টাচার্য।
এদিন কুণাল বনাম রাজ্য সরকারের এই মামলাটি বিশেষ আদালতে তোলা হয়। সেখানে শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হন কুণাল। যদিও তাঁর কোনো শাস্তি হয়নি বলেই খবর মিলেছে।
এদিন বিচারক মনোজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ” আমাদের সামনে রাজ্য সরকার বনাম কুণাল ঘোষ মামলায় যে মেডিক্যাল নথি পেশ করা হয়েছে, তার দ্বারা বর্তমানে এটি প্রমাণিত হয় যে, 2014 সালে 13 ই নভেম্বর কুণাল ঘোষ আত্মহত্যার চেষ্টাই করেছিলেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার চেষ্টা করা অন্যায়; এক্ষেত্রে দুই বছরের জেল পর্যন্ত হয়। তবে আমাদের মনে হয়েছে যে, অবসাদের কারণেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তাই বর্তমানে তাঁর সামাজিক সম্মানের প্রসঙ্গটি ভেবে দেখেই তাঁকে কোনো রকম শাস্তি দেওয়া হয়নি।”
এছাড়াও বিচারক জানান, “আত্মহত্যার চেষ্টা করা হলেও আমরা কুণাল ঘোষকে কোন রকম শাস্তি দিলাম না। আমরা ওঁকে বলেছি যে, অতীতে ওঁর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো না। শুনানি চলাকালীন কুণাল ঘোষের উদ্দেশ্যে বিচারক বলেন, “অবসাদ যতই হোক না কেন, আত্মহত্যা করা কখনই উচিত নয়। আপনি একজন নামকরা সাংবাদিক, আপনার কাছে সমাজের মানুষের অনেক আশা রয়েছে। আপনি এই সব কাজ থেকে বিরত থাকুন এবং সামনের পথে এগিয়ে চলুন।”
তৃণমূল নেতার পাশাপাশি এদিন জেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনা করেন মনোজিৎ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “কুণাল ঘোষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। এমনকি খুনও হতে পারতেন তিনি কিন্তু তা সত্বেও তাঁকে যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি।”