প্রশংসার আড়ালে সমালোচনা! কলকাতায় শ্রেয়া ঘোষালের প্রতিবাদী গান নিয়ে খোঁচা কুনালের

বাংলা হান্ট ডেস্ক : এবার শ্রেয়া ঘোষালকেও আক্রমণে বিঁধলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। অজিকরের তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক ধর্ষণ হত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতার গানের কনসার্ট পিছিয়ে দেওয়ার পর, শনিবার ১৯ অক্টোবর কলকাতায় এসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কনসার্ট করে গিয়েছেন শ্রেয়া ঘোষাল (Shreya Ghoshal)। বাঙালি হওয়ায় কলকাতার প্রতি বরাবরই আলাদাই টান রয়েছে গায়িকার। ইতিপূর্বে একথা প্রমাণিত হয়েছে একাধিকবার।

শ্রেয়া ঘোষালকে আক্রমণ কুনালের (Kunal Ghosh)

এদিন কলকাতায় গান গাইতে এসে তিলোত্তমাকে উদ্দেশ্য করে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে একটি গান গেয়েছিলেন শ্রেয়া। এদিন শিল্পীর গানেই উঠে এসেছিল প্রতিবাদের ভাষা। শ্রেয়ার  গলায়, ‘এই যে শরীরের চিৎকার’ শুনে গায়ে রীতিমতো কাঁটা দিয়ে উঠেছিল অডিটোরিয়াম ভর্তি দর্শকদের।

সাধারণত নিজের প্রত্যেক কনসার্টে ‘ভুলভুলাইয়া’ সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘মেরে ঢোলনা’ গেয়েই অনুষ্ঠান শেষ করেন তিনি।কিন্তু এদিন তা হল না। ‘মেরে ঢোলনা’ গান গাওয়ার পর গায়িকা, মাইক হাতে সকলের কাছে প্রথমেই অনুরোধ জানালেন, ‘এই গান শোনার পর কেউ হাততালি দেবেন না। শুধু শুনুন।’  এরপর প্রতিবাদী গান গেয়ে নিঃশব্দে মঞ্চে ছাড়েন শ্রেয়া। গানের প্রতি গায়িকার এই সাধনা দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন সকলেই।

আরও পড়ুন : RG Kar কান্ডের প্রতিবাদ শুধু নয়! আইকনিক গানে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কেও ট্রিবিউট শ্রেয়ার

তবে শ্রেয়ার এই গানের অনুষ্ঠান নিয়ে এদিন দু’কথা বলতে ছাড়লেন না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এমনিতে যে কোন বিষয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করতে সিদ্ধহস্ত এই তৃণমূল নেতা (Kunal Ghosh)। শ্রেয়া ঘোষালের গানের কনসার্টের বিষয়টিও বাদ গেল না সেই তালিকা থেকে।

কি লিখেছেন কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh)?

এদিন ফেসবুক পোস্টে শ্রেয়া ঘোষালের গাওয়া প্রতিবাদী গানের প্রশংসা করে ভিন রাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে এনে কুনাল ঘোষ লিখেছেন, ‘শ্রেয়ার গান যথাযথ। যাঁরা এই নিয়ে রাজনীতি করতে নেমেছেন, তাঁরা মনে রাখুন, শ্রেয়া প্রথম দিন থেকে বলেছেন নারী নির্যাতনের সমস্যাটা গোটা দেশের সমাজের। তিনি বাঙালী, কলকাতায় গেয়েছেন, ঠিক করেছেন, স্বাগত জানাই। শিল্পী তাঁর মানসিকতা আগে থেকেই বলেছেন। নিজেদের কুৎসার একতরফা লাইনে ব্যবহার করবেন না। এটা গণতান্ত্রিক রাজ্য, শিল্পী গাইতে পারেন। অন্য রাজ্যে এটা হয় না।’

 

কার কি প্রতিক্রিয়া?

সোশ্যাল মিডিয়ায় কুনাল ঘোষের এই পোস্টের কমেন্ট সেকশনে উপচে পড়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ লিখেছেন, ‘দাদা শুধু কলকাতায় কিছু হলেই এদের গান আসে?ধর্ষণ খুন আজ সামাজিক ব্যাধি, সারা দেশের সব রাজ্যে ঘটে চলেছে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে কোনো প্রতিকার নেই। কিন্তু বাংলার মাটি নরম বলে কি এখানেই আঁচড় কাটতে হবে?দিল্লিতে ঘটে যাওয়া নির্ভয়ার মর্মান্তিক ঘটনার পরও শ্রেয়া চুপ ছিলেন যদিও তখনও তিনি যথেষ্ঠ বিখ্যাত,এখনই গান গাওয়ার কথা মনে হোলো?’

পাল্টা কুনাল ঘোষকেই কটাক্ষ করে একজন লিখেছেন, ‘রাজ্যে কোনটা যথাযত আর কোনটা নয়, এখন সেটা ঠিক করছেন চুরির দায়ে জেল খাট লোকজন! সত্যিই বাংলার খুব দুরাবস্থা।’ অপর একজন তিলোত্তমার বিচারের কথা তুলে লিকেছেন, ‘নির্বিকার-উদাসীন থাকাটাও আসলে গণতন্ত্র! প্রমাণ লোপাটের সময় যদি এই গণতান্ত্রিক পরিবেশটা থাকত, তাহলে বোধহয় এতদিনে বিচার প্রক্রিয়া আর একটু ত্বরান্বিত হত।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর