বাংলাহান্ট ডেস্ক : তৃণমূলের অন্দরে চরমে উঠেছে কোন্দল। সেই কোন্দলের আঁচ এতটাই যে তাতে পুড়ছেন খোদ মন্ত্রী থেকে দলের মুখপাত্র, সকলেই। গতকালই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে ‘মন্ত্রীসভার কেউ নয়’ বলে কটাক্ষ করেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এবার তারই পালটা দিলেন কুণাল। তাঁর দাবি মন্ত্রীত্বের জন্য মোটেই হ্যাংলা নন তিনি।
গত কয়েকদিন ধরেই এসএসসি কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল তৃণমূলের অন্দর মহলেই। অব্যাহত একে অপরের কোর্টে বল ঠেলা। এবার ফিরহাদের গতকালের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ফেসবুক লাইভে এসে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল কুণাল ঘোষকে। একই সঙ্গে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর দাবি সঠিক বলে এদিন আবারও দাবি করেন তিনি।
এদিন ফেসবুক লাইভে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘২০২১ সালের ভোটে আমি একদিকে সমন পেয়েছি। আর এক দিকে কাঁথিতে দাঁড়িয়ে অধিকারী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করে গিয়েছি। আমি আমার লড়াই করেছি। আমাকে স্মরণ করাতে হবে না আমি মন্ত্রী নই। আমার কোনও হ্যাংলামি নই। মন্ত্রী হতে না পারলে, যাদের জীবন অসম্পূর্ণ, এসব তাদের দেখাবেন। আমাকে এসব মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ দেখাবেন না। আমাকে জীবন যা দেখিয়েছে, আমি তাঁর উর্ধে আছি। আমি আনুগত্য দেখিয়েছি। জেলে বসে আমি যেমন লড়াই করেছি, তেমনই আমি মাসে দশ হাজার টাকা চাঁদা দলকে দিয়েছি। ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিইনি চাঁদা দেবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেল থেকে বেরোনোর পর কেন্দ্রীয় সরকার আমাকে একটি কমিটির চেয়ারম্যান করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। সাংসদ হিসেবে চেয়ারম্যান হলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে ওঠা যে কোনও অভিযোগের জবাব আমি দেব। যতদিন দেখব অতিথি শিল্পী বা ভাড়াটে বক্তা দিয়ে আমাকে ডিফেন্ড করতে হচ্ছে। তার থেকে থুথু ফেলে ডুবে মরা ভাল।’
জল্পনা ছড়িয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে ওই মামলা থেকে নিজেদের সরাতে চায় অনেকেই। এই প্রসঙ্গেও এদিন সরব হন কুনাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমি পার্থদাকে দোষারোপ করিনি। যে সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে এসএসসি নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন তাঁদের বলেছিলাম তিনিই গুছিয়ে বলে দিতে পারবেন। আমি মনে করি, আমি কোনও ভুল কথা বলিনি। এরপর পার্থদা আমায় ফোন করেছিলেন। পার্থদার সঙ্গে আমার কিছু কথা হয়। ঠিক হয় আমি গতকাল পার্থদার বাড়িতে যাব। আমি গিয়েছি। পার্থদা আমার নেতা। বহুদিনের সম্পর্ক তাঁর সঙ্গে। গিয়ে জানতে পারি, পার্থদার এক আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি অন্য একটি বাড়িতে রয়েছেন। আমি পার্থদাকে ফোন করলে তিনি ফোনও ধরেন। জানান আত্মীয়দের সঙ্গে রয়েছেন।’
তাঁর আরও দাবি ‘দেখলাম আমি নাকি মান ভাঙাতে পার্থদাকে ফোন করেছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে দেখা করেননি। সেটা ঠিক নয়। কথা বলে সময় ঠিক হয়েছিল বলেই আমি উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতায় ঠেঙিয়ে গিয়েছিলাম। নইলে আমার খেয়ে দেয়ে কাজ পড়েনি বাঁশদ্রোনী যাওয়ার।’ আসল ঘটনায় যাই হয়ে থাকুক না কেন, এসএসসি কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে যে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে ঘাসফুল শিবিরের ফাটল, তা বলাই বাহুল্য।