‘নিজেদের ভালো ছবি দেবেন, অথচ…’, মুর্শিদাবাদ ইস্যুতে ট্রোলড ইউসুফ, বিতর্কের মাঝে ব্যাট ধরলেন কুণাল

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এসএসসি থেকে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) ওয়াকফ অশান্তি, পরপর ইস্যুতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে রাজ্য সরকার। জাতীয় রাজনীতিতেও তুমুল সমালোচিত হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনের অবস্থান। এই সময়গুলিতে অদ্ভূত ভাবে দলেরই অনেক নেতামন্ত্রী চুপ থাকেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, দলের আইটি সেল তেমন মজবুত নয়। এর মাঝেই এবার দলের জন্য নতুন সোশ্যাল মিডিয়া গাইডলাইন প্রকাশ করে কটাক্ষ করলেন কুণাল ঘোষ।

মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল

এসএসসি চাকরি বাতিলের মাঝেই মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ অশান্তির রূপ নিলে বিপাকে পড়ে তৃণমূল। পরপর দুই ঘটনায় শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই সময়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় শান্তিতে ‘চা খাওয়া’র ছবি শেয়ার করে বিতর্ক-সমালোচনার মুখে পড়েছেন বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান। মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) যখন জ্বলছে, তখন সাংসদ কোথায়? উঠেছিল প্রশ্ন। তাঁর নীরবতা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি।

Kunal Ghosh took a dig at own party members on murshidabad issue

প্রকাশ পেল নতুন সোশ্যাল মিডিয়া গাইডলাইন: অন্যদিকে আবার মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) হিংসা নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার মধ্যে একটি পোস্টে বেশ কিছু হিংসাত্মক ঘটনার ছবি দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, বাংলায় বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় হিংসা হয়। যদিও পরে জানা যায় যে ওই ছবিগুলির মধ্যে সবকটিই ভিন রাজ্যের। বাংলার বিজেপি এবং সুকান্ত মজুমদার ওই পোস্ট শেয়ার করেও পরে মুছে দেন। এমন একাধিক বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল হলেও তৃণমূলের খুব বেশি বিধায়ক সাংসদকে এর বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি। এবার শনিবার পাঁচ পয়েন্টের সোশ্যাল মিডিয়া গাইডলাইন জারি করে তৃণমূল।

আরো পড়ুন : শীঘ্রই খুলবে কপাল! মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের জন্য বড় উদ্যোগ সরকারের

কটাক্ষ শানালেন কুণাল: সম্প্রতি কুণাল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে কয়েকটি উল্লেখ করে মুখ খুলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের সহযোদ্ধাদের প্রতি অনুরোধ। ১) সোশ্যাল মিডিয়া আজকের দিনে গুরুত্বপূর্ণ। যথাসম্ভব সক্রিয় থাকুন। ২) নিজের ছবি, কর্মসূচির ছবি, নেতার সঙ্গে ছবি একশোবার পোস্ট করুন। কিন্তু তার সঙ্গে দল বা শীর্ষনেত্রী, নেতার বক্তব্য পোস্টে রাখুন, শেয়ার করুন। ৩) শুধু নিজেদের ভালো ছবি নয়, বিরোধীদের কুৎসার জবাব দিন। প্রতি ইস্যু, প্রতি পয়েন্টে জবাব দিন। যে ইস্যুতে মানুষের কিছু সাময়িক বিভ্রান্তি, সেখানে কড়াভাবে দলের লাইনে যুক্তি দিন। ইস্যুভিত্তিতে নীরব থেকে জল মাপবেন না। নিজেদের ভালো ছবি দেবেন, অথচ অপ্রিয় ইস্যুতে ব্যাট করবেন না, এটা দৃষ্টিকটূ। কিছু ক্ষেত্রে ঝড়ের সময় অনেককে দেখা যায়নি। আবার ঝড় থামতে সক্রিয়। এটা সবাই বোঝে।’

আরো পড়ুন : সুপ্রিম কোর্ট-প্রধান বিচারপতিকে কটাক্ষ, বিতর্কের মাঝে দুই সাংসদকে নিয়ে বড় ‘ঘোষণা’ বিজেপির!

আরো পয়েন্ট যোগ করে তিনি লেখেন, ‘৪) দল আছে বলে আমরা যে যার জায়গায়। কোথাও আত্মসমালোচনা থাকতে পারে, তবে তার মধ্যেও আরও অগ্রগতি, মেরামতি। দলের সব ঠিক থাকলে আমি সরব, সব গৌরবের অংশীদার; আর চলার পথে অপ্রিয় ইস্যু এলে আমি নীরব বা বিবেক; এটা হতে পারে না। বিতর্কিত ইস্যুতে মানুষের মাঝে আরও নিবিড় প্রচার আমাদের কর্তব্য। একদল তুমুল গালমন্দ খেয়েও প্রচার করে যাবে, আর কিছু অংশ ইস্যুভিত্তিক জল মাপবে, সব ঠিক হয়ে গেলে আবার পোস্ট হবে, এটা দুর্ভাগ্যের। দলের ভালোর প্রভাবটা নিতে গেলে, অপ্রিয় ইস্যুতেও থাকতে হবে। এটা জীবনের নিয়ম। ৫) মূলত তিনরকম প্রচার জরুরি: ক) মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের কর্মসূচি। খ) বিরোধীদের কুৎসা, অপপ্রচার, চক্রান্ত, বৈষম্যের জবাব। গ) হঠাৎ তৈরি হওয়া ইস্যুগুলিতে লাগাতার বিরোধী অপচেষ্টার পাল্টা তথ্য, যুক্তি, তুলনামূলক ছবি।’ সবশেষে কটাক্ষ শানাতে দেখা গিয়েছে কুণালকে, ‘নেতা হয়ে গেলে কি সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের হয়ে সওয়াল, তর্ক করতে সম্মানে লাগে?’ বিভিন্ন ইস্যুতে মুখ খোলার জন্য দলের সদস্যদের অনুরোধ করেছেন তিনি।

Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

X