বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতবছর থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। গতবছরই জেলে ঠাঁই হয়েছে পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের। তাহলে তখনও অবাধে হতে থাকা নিয়োগ দুর্নীতির মাথা কারা? ইডি সূত্রে খবর, এক ‘দাদা-ভাইয়ের’ জোড় সেই সময়ও চাকরিপ্রার্থীদের প্রলোভন দেখিয়ে দেদার টাকা তুলেছেন।
চার্জশিটে ইডির (ED) দাবি, শিক্ষক কেলেঙ্কারির সেই যুগলবন্দি চালিয়ে গিয়েছিলেন হুগলীর কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Santanu Banerjee)। তদন্তকারী সংস্থার আরও অভিযোগ, চাকরি বিক্রির ক্ষেত্রে বড় বড় প্রভাবশালীর হাত ছিল এদিন ‘দাদা-ভাইয়ের’ মানিকজোড়ের মাথায়। তবে যে সময় নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক জেলে, তখন এই কুন্তলদের সাহস কে জোগাত?
নাকি একজন নয়, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে চাকরি বিক্রির পেছনে ছিল পার্থর থেকেও বড় মাথারা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইডি। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তখন জেলে, সেই অবস্থাতেও ২০২২ সালের নভেম্বরে আয়োজিত টেটের প্রার্থীদের কাছেও চাকরি বিক্রি করে গিয়েছেন কুন্তল। ইডির দাবি, যে সকল চাকরিপ্রার্থী পূর্ববর্তী টেটে বসে টাকা দিয়েও চাকরি পাননি, ২০২২-এর টেটে তাদের থেকেই ফের টাকা নিয়ে চাকরিতে বসিয়েছিলেন কুন্তলেরা।
ইডি-র দাবি, ২০২২ সালের নভেম্বরে যে প্রাথমিক টেট হয়েছে সেই পরীক্ষারও ২৬৭ জন প্রার্থীর উত্তরপত্র পাওয়া গিয়েছে কুন্তলের ফ্ল্যাট থেকে। সেই সঙ্গে মিলেছে চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের নথিও। বাজেয়াপ্ত করা সেই সব ওএমআর শিটে পরীক্ষার্থীদের সইটুকু ছাড়া আর কিছুই ছিল না বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি। ইডির আরও দাবি, জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন, টাকা নেওয়ার পরও ওই সব চাকরিপ্রার্থী ২০১৪ সালে টেটে বসে পাশ করতে পারেননি।
২০১৪ সালে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম দু’লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল। তবে তাও চাকরি না মেলায় পরবর্তী পর্যায়ে ‘আরটিআই’ এর মাধ্যমে নম্বর বাড়ানোর আবেদন করা হলেও আইনি জটিলতার কারণে সেই পদক্ষেপ সম্ভব হয়নি। এরপর ২০২২ সালে চাকরি না হওয়ার সেই ২৬৭ জন প্রার্থীর কাছ থেকে আবার ২০ হাজার টাকা অগ্রিম নেন কুন্তল ও শান্তনু। ইডি সূত্রে দাবি চাকরি পাওয়ার পরে ফের সেই অযোগ্যরা প্রত্যেকে আরও এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দেবেন বলেও সম্মতি জানান। সেই সকল প্রার্থীদেরই ওএমআর শীট উদ্ধার হয়েছে কুন্তলের কুন্তলের কাছ থেকে। পার্থ ও মানিকের গ্রেফতারির পরেও কার ইন্ধনে প্রতারণার খেলা চালিয়ে গেল কুন্তলরা সেই প্রশ্নের উত্তর পেতেই তদন্ত চালাচ্ছে ইডি।