বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে জয় কুন্তলের! ‘নির্যাতন’ মামলায় বড় নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার (Justice Amrita Sinha) একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের (Division Bench) দ্বারস্থ হয়েছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষ। বুধবার এই মামলায় কুন্তলের পক্ষেই রায় দিলেন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয় কুন্তল ঘোষের বক্তব্যও শুনতে হবে। সিঙ্গল বেঞ্চকেই তার অভিযোগ শুনতে হবে। অর্থাৎ বিচারপতি সিনহার এজলাসে ফেরত গেল কুন্তল ঘোষের মামলা (Kuntal Ghosh)।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই আধিকারিকরা তার উপর নির্যাতন করেছে। ক্রমাগত তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূলের বহিস্কৃত যুবনেতা কুন্তল। গত এপ্রিল মাসে এই অভিযোগ করে প্রথমে নিম্ন আদালতের বিচারকের কাছে চিঠি জমা দেন কুন্তল।

এখানেই শেষে নয় পরে এই নিয়ে জেল সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আলিপুর সিবিআই আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় সিবিআই এবং কলকাতা পুলিশকে যৌথভাবে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে ওই রিপোর্ট দিতে হবে বলেও সেইসময় সাফ জানিয়েছেন বিচারক।

এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিশেষ আদালতের এই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মামলার তদন্ত বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এরপর তদন্তের পক্ষে সওয়াল করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ জেলবন্দি কুন্তল ঘোষ। কেন তার পক্ষের বক্তব্য না শুনেই কলকাতা হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে, এই প্রশ্নেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কুন্তল।

আরও পড়ুন: আচমকাই দিল্লি থেকে বিশেষ CBI অফিসারকে ডাক! নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে হাইকোর্টের নির্দেশে তুলকালাম

তার পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে, এই আর্জি নিয়েই হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের এজলাসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুন্তল। শুধু তাই নয়, কুন্তলের আরও আর্জি সিবিআই ও কলকাতা পুলিশকে এই নিয়ে যৌথ তদন্ত চালানোর যে নির্দেশ বিশেষ আদালত দিয়েছিল, তা পুনর্বহাল করতে হবে।

high court

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে কুন্তলকে নিজের চেম্বারে ডেকে তার সমস্ত অভিযোগ শুনেছিলেন বিশেষ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই, কুন্তলের এই অভিযোগ নিয়ে সিবিআই এবং কলকাতা পুলিশকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ এসেছিল। এই নিয়ে তদন্তও শুরু হয়। তবে পরে হাইকোর্টে গিয়ে নিম্ন আদালতের নির্দেশের বিরোধিতা করে সিবিআই।

সিবিআই এর যুক্তি ছিল, ধৃত গ্রেফতারির এতদিন কেন অভিযোগ সামনে আনছেন, যে সময়ে হেনস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন, সেই সময় কোর্টে এই বিষয়ে কিছুই বলেননি কুন্তল। পাশাপাশি বিচারকের ক্যামেরা-হীন চেম্বারে অভিযুক্তকে ডেকে কেন অভিযোগ শোনা হল, সেই বিষয়ও তুলে ধরেন গোয়েন্দারা।

সমস্ত বিষয় শোনার পর সিবিআই বিশেষ আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিচারপতির সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ জেলবন্দি কুন্তল। এদিন কুন্তল মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, অত্যাচারের অভিযোগ মিথ্যা হতেই পারে, কিন্তু সেটাও খতিয়ে দেখা উচিত।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর