বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মারণ ভাইরাস করোনার জন্য দেশজুড়ে মহামারী লেগেছে। এর প্রভাবে দিনে দিনে অর্থনৈতিক সঙ্কট। পাশাপাশি বেড়ে চলেছে বেকারত্বও। আর এর মাঝে কুয়েতের সংসদে একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে, যা কাজের ক্ষেত্রে প্রবাসী শ্রমিক এবং কুয়েতের (Kuwait) নাগরিকদের মধ্যে ভারসাম্য আনবে। অনুমোদিত হলে এই আইনের ফলে কয়েক লাখ বিদেশী কর্মী কাজ হারাতেও পারেন।
প্রস্তাবটিতে জাতীয়তার সাথে আনুপাতিক সীমাবদ্ধতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে কুয়েতে কোন দেশের নাগরিকের সংখ্যা কুয়েতির সংখ্যার চেয়ে বেশি না হয়। যার ফলে আল-খালি কুয়েত থেকে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ভারতীয় এবং ৫ লাখ মিশরীয় বিতাড়িত হতে পারেন।
কুয়েতে বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন কর্মীদের বাতিল করা বা বিদ্যমান কর্মীদের নবায়ন বন্ধের পাশাপাশি বিদেশিদের কাছ থেকে চাকরীর আবেদন জমা না নিতে বলা হয়েছে। এই আইন লঙ্ঘনের জন্য প্রস্তাবিত শাস্তি হল, সব্বোর্চ দশ বছরের কারাদন্ড অথবা, সর্বাধিক এক লাখ দিনার (৩ লাখ ২৩ হাজার ডলার) জরিমানা অথবা, উভয় দন্ড।
কুয়েতের নাগরিক কর্তৃপক্ষের গত বছরের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটির জনসংখ্যা ৪৭ লাখ। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ নাগরিক এবং ৭০ শতাংশ অভিবাসী। ইতিমধ্যে, কুয়েত এয়ারওয়েজ করোনাভাইরাস মহামারীজনিত কারণে সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য অসুবিধার কারণে ১ হাজার ৫০০ জন প্রবাসী কর্মীকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার কুয়েতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমানসংস্থাটির টুইটারে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
কুয়েতের মোট জনসংখ্যা ৪৩.৩ মিলিয়ন, যার মধ্যে ৩০ কোটি অভিবাসী। মোট অভিবাসীদের মধ্যে ১৪.৫ লক্ষ ভারতীয় রয়েছেন। এর অর্থ ১৫ শতাংশ কোটার অর্থ ভারতীয়দের সংখ্যা ৬.৫-৭ লক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এই আইনটি কেবল ভারতীয়দের জন্যই নয়, সমস্ত অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইন্ডিয়ান ছাড়াও মিশরে কুয়েতে দ্বিতীয় বৃহত্তম অভিবাসী সম্প্রদায় রয়েছে। করোনার ভাইরাস মহামারী কুয়েতের অর্থনীতিতেও খারাপ প্রভাব ফেলেছিল।
বেশ কয়েক মাস আগে কুয়েতে অভিবাসীদের নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। এখানকার সংসদ সদস্য এবং সরকারী কর্মকর্তারা বিদেশী নাগরিকের সংখ্যা হ্রাস করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালিদ এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে দেশে অভিবাসীদের জনসংখ্যার শতাংশ কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা উচিত।