স্কুলের বড় দিদিরাই এখন দিদিমণি! শিক্ষকের অভাব পূরণ করতে অভিনব উদ্যোগ

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত সপ্তাহেই প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের (Teachers) চাকরি বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপর থেকেই কার্যত বেহাল দশা রাজ্যের অধিকাংশ সরকারি স্কুলগুলির। পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে প্রায় বন্ধের মুখে পঠন পাঠন। এক ধাক্কায় এতজন শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে ব্যাপক শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের পঠন-পাঠন চালিয়ে যেতে বিকল্প পদ্ধতি হিসাবে উঁচু ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে ছোটদের।

শিক্ষকের (Teachers) অভাব পূরণ করতে অভিনব উদ্যোগ উত্তরবঙ্গে

শিলিগুড়ির শিক্ষা জেলার বিধাননগরের মুরালিগঞ্জ হাই স্কুলেও সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানেই এদিন দ্বাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ক্লাস নিতে দেখা গিয়েছে সপ্তম শ্রেণীর। বিউটি দাস নামে ওই ছাত্রী জানিয়েছেন ছোটদের পড়ালে বিষয়গুলি নিজেদেরও অনেকটা সরগর হয় ভালোই লাগে। তবে ছোটদের ক্লাস নেওয়ার জন্য কোন পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না তাঁরা। তবে জানা যাচ্ছে, স্কুলের তরফ থেকে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম জানিয়েছেন,’উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাদের দিয়ে ক্লাস করানো হলে স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা হবে।’ সেইসাথে খেয়াল রাখা হচ্ছে ছোটদের ক্লাস নিতে গিয়ে যাতে উঁচু ক্লাসের ওই পড়ুয়াদের ক্লাস ফাঁকি না যায় সেদিকেও।

জানা যাচ্ছে,মুরালিগঞ্জ হাইস্কুলে প্রায় ২ হাজার ৮০০ জন পড়ুয়া রয়েছেন। ওই স্কুলের চাকরিহারা শিক্ষকদের (Teachers) সংখ্যা ৭ জন। যারা জেরে স্থায়ী শিক্ষক এখন ১৫ জন। জানা যাচ্ছে,বাতিল হওয়া শিক্ষকদের তালিকায় চার জন বিজ্ঞানের শিক্ষক। যার ফলে বর্তমানে ওই স্কুলে সব ক্লাসের জন্য মাত্র দু’জন বিজ্ঞানের শিক্ষক থাকছেন।

আরও পড়ুন: কৃষক বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহের মতো শিক্ষক বিদ্রোহ হবে! চাকরি বাতিল হতেই বিরাট হুঁশিয়ারি শিক্ষকদের

শুধু উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারাই নয়, উত্তরবঙ্গের ওই ঐতিহ্যবাহী স্কুলের পড়ুয়াদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তনীরাও। স্কুল সূত্রে খবর  ওই স্কুলের মোট ২৫ জন প্রাক্তনী আংশিক সময়ের শিক্ষক (Teachers) হিসাবে বিভিন্ন ক্লাস করাচ্ছেন। ছোট থেকে, যে স্কুলে তাঁরা পড়াশোনা করে বড় হয়েছেন, এই দুর্দিনে সেই স্কুলের ভাইবোনদের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন তাঁরা। তাই চাকরি বাতিলের নির্দেশের পরেও যাতে ক্লাস বন্ধ না হয় সেজন্য তাঁরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়েছেন।

School Holidays

প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘প্রাক্তনীরা স্কুলকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’এক প্রাক্তনীর বক্তব্য, ‘চাকরি বাতিলের বিষয়টি মর্মস্পর্শী। আমাদের মজুরি যেমনই হোক, এই মুহূর্তে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।’ মুরলীগঞ্জ ছাড়াও উত্তরবঙ্গের আরও একাধিক স্কুলে কোথাও শিক্ষকের অভাবে নির্দিষ্ট বিষয়ের ক্লাস বন্ধ তো কোথাও ঘণ্টা বাজানোর কর্মীর অভাব তৈরী হয়েছে।

Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

X