বাংলা হান্ট ডেস্ক : সাধারণভাবে দেখলে মনে হবে এটি আর পাঁচটা ট্রেনের মত সাধারণ কোনো ট্রেন। তবে এর কাছে এলেই ভেঙে যাবে ভুল ধারণা। এটি এমন এক ধরনের “স্বপ্ন” যা অসহায় বৃদ্ধা মায়েদের নতুনভাবে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। সেই অনুযায়ী এর নাম দেওয়া হয়েছে স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস। অন্যান্য ট্রেনে উঠে যেমন সহযাত্রীদের সাথে গল্প গুজব করা থেকে শুরু করে নিশ্চিন্তে গন্তব্যে পৌঁছানো সবই করা যায় নিশ্চিন্তে, সেই সব রকম ব্যবস্থাও আছে এই স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেসে।
বীরভূমের এক মহিলা কনস্টেবল ছবিলা খাতুন নিয়েছেন এমনই একটি অভিনব উদ্যোগ। ছবিলা খাতুন নিজের চার চাকা গাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন তার এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য। চারচাকা গাড়ি বিক্রি করে যে টাকা পেয়েছেন তা দিয়ে তিনি সিউড়ির পার্শ্ববর্তী কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শালবনী গ্রামে দেড় বিঘা জমি কিনেছেন। সেই জমিতেই তিনি স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করেছেন।
এই মহিলা কনস্টেবল ও তার মা সমাজসেবা করতে পছন্দ করেন। মা বর্তমানে ক্যান্সার আক্রান্ত। তাই মায়ের বিপুল পরিমাণ চিকিৎসার খরচ ও সংসারের খরচের পর বৃদ্ধাশ্রম শুরু করা রীতিমতো একটা চ্যালেঞ্জ এর কাজ হয়ে দাঁড়ায় ছবিলা খাতুনের কাছে। ছবিলার বৃদ্ধাশ্রমের স্বপ্ন সার্থক করার জন্য তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন বীরভূম জেলা পুলিশের বিভিন্ন আধিকারিকরা।
এই বৃদ্ধাশ্রমে আপাতত জায়গা দেওয়া হয়েছে দশজন বৃদ্ধাকে। এই দশজন বৃদ্ধার মধ্যে কেউ রাত কাটাতেন স্টেশনে, আবার কেউ নিজেদের সন্তানদের থেকে ছিলেন অনেক দূরে। এই বৃদ্ধাশ্রমে মোট ২৫ জনের থাকার জায়গা রয়েছে। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে এখন মাত্র ১০ জনকেই জায়গা দিতে পেরেছেন ছবিলা। এই মহিলা কনস্টেবলের বিশ্বাস, তিনি খুব দ্রুত আরো ১৫ জন নতুন অসহায় বৃদ্ধা মাকে জায়গা করে দিতে পারবেন তার স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেসে।