বাংলাহান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি কিছু দিন ধরে তোলপাড় চলছে ইজরায়েলে (Israel)। সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ চলছে। বলা হচ্ছে, এত বড় প্রতিবাদ এর আগে দেখেনি দেশটি। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। নেতানিয়াহু সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনতে চায়। এটিকে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে দেখছেন বিক্ষোভকারীরা।
ইজরায়েলে হাইফার মতো শহরে রেকর্ড সংখ্যক জনতা সরকারের নতুন বিচার নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। রাজধানী তেল আভিভেও প্রায় ২ লক্ষ মানুষ প্রতিবাদ করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের প্রস্তাবিত আইন ও পরিবর্তন দেশে গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলবে। ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাবে গণতন্ত্র। অন্যদিকে সরকার জানিয়েছে, এই নতুন ব্যবস্থা ভোটারদের সুবিধার্থেই বানানো হচ্ছে। গত শনিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৫ লক্ষ মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
ইজরায়েলের মানুষের মতে, এটিই সে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। সম্প্রতি ইজরায়েলের সংসদে পাশ হয়েছে বিচার বিভাগের পরিবর্তন সংক্রান্ত বিলের প্রথম পঠন। সেখানে বলা হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট তার ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার করতে পারবে না। বিচার ব্যবস্থায় নতুন সংস্কার হলে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা অনেকটাই কমে যাবে। মানুষের আশঙ্কা, এতে সঠিক বিচার নাও পেতে পারেন তাঁরা। তাই আজ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হয়েছে দেশবাসী।
শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত এই সংস্কার যদি আইনে পরিণত হয়, তাহলে ইজরায়েলের ব্যবস্থাই পাল্টে যাবে। বিচারক বাছাই কমিটিতে সরকারের হস্তক্ষেপ বাড়বে। অর্থাৎ দেশের বিচারব্যবস্থা আর নিরপেক্ষ থাকবে না। এই প্রস্তাবে সবচেয়ে বড় বিতর্কের কারণ হলো, এই আইনটি তৈরি হলে আদালত আর যেকোনও আইন প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না। তাদের সেই অধিকার শেষ হয়ে যাবে। ইজরায়েলের আইনমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন বলেছেন যে সংসদ অবসরে যাওয়ার আগে সরকার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব পাস করবে।
বিরোধীদের আশঙ্কা, বিচারব্যবস্থায় এই পরিবর্তন হলে দেশের গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে। ন্যায়ব্যবস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপ বাড়লে দেশে দুর্নীতি বেড়ে যাবে। কারণ বিচারব্যবস্থা অনেক দুর্বল হয়ে পড়বে। যা দেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। উল্লেখ, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিরোধীদের মতে, বিচারব্যবস্থার পরিবর্তন করে তিনি নিজের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ এড়াতে চাইছেন। বিক্ষোভকারীরা আরও জানিয়েছেন, এই পরিবর্তন হলে বিচার ব্যবস্থার রাজনীতিকরণ হয়ে যাবে। এর ফলে দেশে স্বৈরাচারী শাসন নিশ্চিত হয়ে যাবে।