বাংলা হান্ট ডেস্ক: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যবাসীর কাছে একাধিক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই একে একে সেইসব প্রতিশ্রুতি পূরণও করতে থাকেন তিনি।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত তপশিলি জাতি-উপজাতি মহিলাদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা ও সাধারণ মহিলাদের জন্য মাসে ৫০০ টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ২৫ থেকে শুরু করে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত সমস্ত মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।
তবে এবার, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ম বদল করছে সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে নতুন নিয়ম সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এবার থেকে সরকারি এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদনকারীদের ব্যাঙ্কের সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। গত বৃহস্পতিবার এই নয়া নির্দেশের কথা জানানো হয়েছে নবান্নের তরফে।
নবান্ন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার “দুয়ারে সরকার” প্রকল্প নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এইচ. কে. দ্বিবেদী। সেই বৈঠকেই মুখ্যসচিব এই নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য ব্যাঙ্কে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থাকলেই আবেদন করা যেত। কিন্তু, এই বারে আর জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট নয়, শুধুমাত্র সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট থাকলে তবেই এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন আবেদনকারীরা।
ইতিমধ্যেই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট নিয়ে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার জন্যই এই নির্দেশ বলে নবান্ন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। জানা যাচ্ছে যে বহু ক্ষেত্রেই, জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থাকার কারণে মূল আবেদনকারী টাকা নেওয়ার আগে পরিবারের অন্য কেউ সেই টাকা তুলে নিচ্ছেন। যেই কারণে এবার নতুন এই নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে।
পাশাপাশি, গত বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকে মুখ্যসচিব আধার সংযুক্তিকরণের ওপরেও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। খাদ্যসাথী বা স্বাস্থ্যসাথী সহ বিভিন্ন প্রকল্প গুলিতে আধার সংযুক্তিকরণ বাড়ানোর পাশাপাশি পাড়ায় সমাধানের ক্যাম্পগুলো আরও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে করতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই এক কোটি গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা। অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় ১০৮২ কোটি টাকা।