বড় বদল! মহিলা পুলিশকর্মীদের কাঁধে বিরাট দায়িত্ব, যৌন নির্যাতন বা পকসোর ঘটনায় নয়া নির্দেশ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যৌন নির্যাতন থেকে ধর্ষণ দিনে দিনে একটা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হচ্ছে। দেশ-রাজ্য-জেলা সর্বত্র ধরা পড়ছে প্রায় একই ছবি।  দেশ জুড়ে কড়া নিয়ম কানুন চালু হওয়ার পরেও কিছুতেই রাশ টানা যাচ্ছে না নারী নির্যাতনের ঘটনায়। দুধের শিশু থেকে প্রতিবন্ধী যুবতী কিংবা বয়স্ক মহিলা রেহাই পাচ্ছেন না কেউই। আর এবার যৌন নির্যাতন বা পকসোর ঘটনায় নতুন নির্দেশ দিল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)।

কলকাতার মহিলা পুলিশকর্মীদের (Kolkata Police) কাঁধে বিরাট দায়িত্ব

অনেক সময় দেখা যায় রক্ষকরাই নেমে এসেছেন ভক্ষকের ভূমিকায়। অতীতেএই ঘটনায় এ ধরনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে সিভিক ভলেন্টিয়ার থেকে শুরু করে কর্মরত পুলিশ অফিসারদেরও। এমনকি অনেক সময় দেখা গিয়েছে নির্যাতিতা তরুণী কিংবা নাবালিকার জবানবন্দীর জন্য পুলিশ অফিসারের দ্বারস্থ হলে সেখানেও তাঁর অসহায় অবস্থায় সুযোগ নেওয়া হয়েছে।

তাই এবার থেকে যৌন নির্যাতন কিংবা পকসো মামলায় অভিযোগ নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র মহিলা পুলিশ অফিসারদেরই। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে অভিযোগকারী তরুণী কিংবা নাবালিকার জবানবন্দি নেওয়ার দরকার হলেও তা করবেন মহিলা পুলিশ কর্মীরাই। সম্প্রতি লাল বাজারের তরফে মহিলা পুলিশ (Kolkata Police) কর্মীদের জন্য পকসো আইন নিয়ে একটি  প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল।

সেখানেই এদিন এমনই একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ (Kolkata Police) বাহিনীর অফিসারদের। সূত্রের খবর, এই নির্দেশ আগেই দিয়ে রেখেছে আদালত। কিন্তু আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই বাহিনীর মধ্যে সেই নিয়ম মানার ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখা যাচ্ছিল।তাই আরও একবার ওই সমস্ত নিয়ম মনে করিয়ে দেওয়া হল পুলিশকর্মীদের।

যদিও একইসাথে জানানো হয়েছে,পকসো এবং মহিলাদের উপরে যৌন নির্যাতনের মামলায় তদন্তকারী অফিসার কিন্তু যে কেউ হতে পারেন। তবে, অভিযোগকারী কিংবা ভুক্তভোগী নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা একজন মহিলা অফিসারকেই করতে হবে। এমনকি ওই সময় যদি থানায় কোনও মহিলা পুলিশকর্মী উপস্থিত নাও থাকেন তাহলে অন্য থানা থেকে মহিলা পুলিশ (Kolkata Police) অফিসার কিংবা কর্মী  নিয়ে এসে ওই কাজ করাতে হবে।

আরজিকর কান্ডে নির্যাতিতার নাম পরিচয় ফাঁস করেছিলেন প্রাক্তন সিপি বিনীত গোয়েল।  যা আইনত অপরাধ। তাই সেবিষয়ে সতর্ক করতেই এদিন পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, যৌন নির্যাতন কিংবা পকসো মামলার ক্ষেত্রে নির্যাতিতার নাম কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। তা সে অভিযোগপত্র হোক কিংবা এফআইআরের নথি অথবা শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট।

আরও পড়ুন: ‘আপনি শুধু শুধু..,’ খুললো কপাল? পার্থর মামলায় যা বলল আদালত

জানা যাচ্ছে ওই প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানার অফিসাররা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা। লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে পকসো, বিএনএস এবং বিএনএসএসের ধারা মেনে সঠিক পদ্ধতিতে ভাবে তল্লাশি চালানো এবং জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার বিষয়েই এদিনের এই কর্মশালায় আলোচনা করা হয়েছে।

Kolkata Police

একইসাথে এদিন আলোচনা করা হয়েছে, তল্লাশি চালানোর সময়ে কত ক্ষণ ভিডিয়ো করতে হবে কিংবা সেই ভিডিয়ো কী ভাবে আদালতে জমা দিতে হবে, এই সংক্রান্ত নানান খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও। এখনকার নিয়ম অনুযায়ী মোবাইলে ভিডিয়ো করে তা মেমরি কার্ড কিংবা পেনড্রাইভে ভরে আদালতে জমা দিতে হয়। এছাড়া রাজ্য পুলিশ এলাকায় বর্তমানে জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা কিংবা তল্লাশি চালানোর ভিডিও একটি পোর্টালেও আপলোড করতে হচ্ছে। সেখান থেকে তা সোজা চলে যাচ্ছে আদালতে। যদিও এই নিয়ম কলকাতা পুলিশ এলাকায় এখনও চালু হয়নি।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর