বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বগটুই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের (Lalon Sheikh) রহস্যমৃত্যুতে আলোড়ন পড়েছিল গোটা বঙ্গে। কীভাবে সিবিআই (CBI) হেফাজতে অস্বাভাবিক ভাবে মারা গেলেন লালন,আত্মহত্যা নাকি উদ্দেশ্য মাফিক খুন! এই প্রশ্নই উঠে এসছিল বিভিন্ন মহল থেকে। এরপরই এই মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)।
এদিন হাইকোর্টে (High Court) কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে হাই কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী। অন্যদিকে জনস্বার্থ মামলকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান , স্বতঃপ্রণোদিতভাবে জনস্বার্থ মামলাটি যাতে কোর্ট গ্রহণ করে, পাশাপাশি সিবিআইকে দিয়েই এই মামলার তদন্ত করানোরও দাবি জানান তিঁনি।
উল্লেখ্য, একদিকে বগটুই গণহত্যা কাণ্ড ঘটনায় হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই (CBI)। অন্যদিকে বগটুই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত করছে সিআইডি (CID)। এখন এই তদন্ত নিয়েই সিবিআই এবং সিআইডি দুই সংস্থার মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে দ্বন্দ্ব।
এদিন শুনানির সময়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব (Justice Prakash Shrivastava) প্রথমে জনস্বার্থী মামলাকারীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সমান্তরাল তদন্ত চাইছেন?” তখন আইনজীবী সব্যসাচী বলেন, “কোনও কমিশন বা কমিটি গঠন করে ঘটনাটির অনুসন্ধান করা হোক।” এরপর বিচারপতি জনস্বার্থী মামলাকারীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সমান্তরাল তদন্ত চাইছেন?” তখন তার উত্তরে আইনজীবী বলেন, “কোনও কমিশন বা কমিটি গঠন করে ঘটনাটির অনুসন্ধান করা হোক।”
ফের প্রধান বিচারপতি আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি অনুসন্ধান চাইছেন? তদন্ত তো চলছে। কী চাইছেন স্পষ্ট করে বলুন।” উত্তরে জনস্বার্থ মামলাকারী বলেন, “এই ঘটনাটির অনুসন্ধান করার পর কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করা হোক।” রাজ্যের হাতে যাতে কোনওভাবেই তদন্ত ভার না দেওয়া হয়, তার জন্য সওয়াল করেন তিনি।
এরপর প্রধান বিচারপতি মামলাকারীরকে বলেন, “কোন সংস্থা নিরপেক্ষ? আপনার কী মনে হয়?” উত্তরে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, “অনুসন্ধান কমিশন আইন অনুসারে কোনও বিচারপতির নজিরদারিতে সিবিআই তদন্ত করুক।” সব শুনে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় নতুন করে বিচারপতি নিয়োগ করে ফের তদন্ত করার প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানিয়ে, সিআইডির হাতেই তদন্ত ভার রাখে। সাথেই সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না জানিয়েছে আদালত। সেই মতোই এগোচ্ছে তদন্ত।
অন্যদিকে সিবিআই এর আইনজীবী আরও বলেন, “মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এই ঘটনাটি সিবিআই নিজেই খতিয়ে দেখছে। শুধুমাত্র লালনের স্ত্রীর দাবির প্রেক্ষিতে সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হল। বারবার সিবিআইয়ের সম্মানহানি করতে উঠে পড়ে লেগেছে রাজ্য।” সিবিআই এর আইনজীবী তরফে আরও বলা হয়, যাঁরা নির্দিষ্ট একটি তদন্ত করছে, উদ্দেশ্য মাফিক সেই সকল অফিসারদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনা হচ্ছে। এছাড়াও বাংলার আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে রাজ্য পুলিশ ব্যর্থ বলেও জানান কেন্দ্রের আইনজীবি। এদিন গোটা বিষয়টি শোনার পর এই মামলার রায়দান আপাতত স্থগিত রেখেছেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পরবর্তীতে এই মামলার জল কোন দিকে গড়ায় সেটাই এবার দেখার বিষয়।