বাংলা হান্ট ডেস্ক : বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ভারতের (India) অরুণাচলপ্রদেশের (Arunachal Pradesh) লোওয়ার দিবাং উপত্যকায় দিবাং নদীর ওপর তৈরি হবে বাঁধ। যা থেকে তৈরি হবে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। এর থেকে ২৮৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বছরে। এই প্রকল্পটি তৈরি করতে খরচ হবে মোট ৩১৯ বিলিয়ন টাকা। মোট ৯ বছর সময় লাগবে এই বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে।
তবে ভারত প্রথম নয়। এর আগে তিব্বতে ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছেই চিনও বেশ কয়েকটি বাঁধ তৈরি করে ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ বদলের রাস্তা তৈরি করে রেখেছে। ভারতও তাই ইটের বদলে পাটকেলটি ছুঁড়ল। এবার ভারতও চিনা সীমান্তের এত কাছে একটি বাঁধ তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। তবে এই বাঁধ তৈরির ফলে ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
ভূগর্ভস্থ ভিতের ওপর ২৭৮ মিটার লম্বা বাঁধ তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে দিবাং নদীর ওপর। বাঁধটি তৈরি হবে সম্পূর্ন কংক্রিটের। জানা যাচ্ছে বাঁধটি ঘোড়ার খুরের আকারে তৈরি করা হবে। ৩০০ থেকে ৬০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯ মিটার ব্যাসের টানেল থাকবে এই বাঁধের নীচে। এই বাঁধের নীচে ভূগর্ভস্থ একটি পাওয়ার হাউসও থাকবে। জলের স্রোতকে কাজে লাগিয়ে সেখান থেকেই তৈরি হবে জলবিদ্যুৎ।
এই বাঁধের মূল লক্ষ্য হবে ওই অঞ্চলের বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জল ধারণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন। এই ২৭৮ মিটার লম্বা বাঁধটি তৈরি হয়ে গেলে সেটি ভারতের সবচেয়ে উঁচু বাঁধ হবে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মিত হলে অরুণাচলপ্রদেশ সরকার এই নির্মাণকাজে খরচ হওয়া অর্থের ১২ শতাংশ পাবে। এদিকে এই অঞ্চলের আদিবাসীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় এবং তাদের ঐতিহ্য যাতে অক্ষত থাকে, তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২৪১ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইয়ারলুং সাংপো নদীতে চিন বিশাল বাঁধ নির্মাণ করছে। নির্মাণাধীন বাঁধটি মেদগ সীমান্তে অবস্থিত। এই অঞ্চলটিও অরুণাচল প্রদেশের কাছেই অবস্থিত। চিনের তৈরি এই বাঁধ নির্মাণ নিয়ে চিন্তায় ছিল ভারতও। অরুণাচল প্রদেশের কাছে ইয়ারলুং সাংপোতে চিনের এই ৬০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বাঁধ ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলেই মনে করছেন প্রকৃতি বিশেষজ্ঞ এবং প্রতিরক্ষা বিশারদরা। আর এরই জবাব দিতে অরুণাচলেই পাল্টা বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা ভারতের।