বাংলাহান্ট ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীদের ডিএ বাকি থাকা নিয়ে বার বার আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। একই ছবি দেখা গিয়েছে কেন্দ্রেও। সেখানেও দীর্ঘ সময় ধরে ডিএ বাকি রেখেছে সরকার (Central Govt Employee DA Due)। কর্মীরা আশা করছিলেন, হয়তো মার্চের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের বকেয়া টাকা। কিন্তু সরকার যা ইঙ্গিত দিল, তাতে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে সরকারি কর্মীদের।
মার্চের মধ্যে বকেয়া ডিএ পাওয়ার আশা করলেও সরকারের ইঙ্গিতে বোঝা গেল, আপাতত তা হয়তো হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক বাকি থাকা ডিএ নিয়ে রাজ্যসভায় লিখিত উত্তর দিয়েছে। সংসদের উচ্চকক্ষে কংগ্রেস সাংসদ নারনভাই রাঠওয়ার প্রশ্নের লিখিত উত্তর দিয়েছে অর্থমন্ত্রক।
করোনার সময় থেকে কর্মীদের ডিএ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল লকডাউনের ফলে অর্থনীতির বেহাল দশা। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ১৮ মাসের ডিএ বকেয়া রয়েছে সরকারি কর্মী ও পেনশনপ্রাপকদের। কেন্দ্র এ বিষয়ে কী ভাবনাচিন্তা করছে, রাজ্যসভায় এই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ।
তাঁর প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী একটি লিখিত রিপোর্ট দেন। সেখানে তিনি জানান, ‘বিভিন্ন সংগঠন সরকারি কর্মী ও পেনশনপ্রাপকদের ১৮ মাসের বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবি করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের উপর আর্থিক বোঝা কমানোর উদ্দেশ্যে ডিএ ও ডিআর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’
রিপোর্টে আরও লেখা, ‘কিন্তু কোভিডের প্রভাব এখনও চলছে। সামাজিক উন্নয়ন করতে সরকারের যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছিল, তা ২০২০-২১ অর্থবর্ষের সীমাবদ্ধ নেই। সেই কারণে বকেয়া টাকা এই মুহূর্তে দেওয়া বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নয়।’ অর্থ প্রতিমন্ত্রীর এই জবাবে আপাতত বড় ধাক্কা খেলেন সরকারি কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, করোনার সময় ডিএ বন্ধ করে দেওয়ায় কেন্দ্রের প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া শুরু হয়। বর্তমানে ৩৮ শতাংশ হারে ডিএ পান সরকারি কর্মী ও পেনশনপ্রাপকরা। দীর্ঘ ১৮ মাস ডিএ বাকি থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে বকেয়া মেটানোর দাবি জানান তাঁরা।
কেন্দ্রীয় কর্মচারী সংগঠনগুলির দাবি, ডিএ এবং ডিআর পাওয়া কর্মী ও পেনশনপ্রাপকদের অধিকার। তাই সরকার এটি এভাবে আটকে রাখতে পারে না। করোনার সময়েও সরকারি কর্মীরা কাজ করেছেন। তাই তাঁদের ডিএ ও ডিআর প্রাপ্য। এ বিষয়ে কেন্দ্রকে ভাবনা চিন্তা করার দাবি জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, দাবি মানা না হলে ডিএ আদায়ের জন্য আন্দোলনের পথে যেতেও প্রস্তুর কর্মচারী সংগঠনগুলি।