বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বাবা মহাদেবের (Mahadeb) অপার মহিমা, তাঁর অসাধ্য কোন কিছুই নেই। শিব (Shib), বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের প্রধান তিন দেবতাদের মধ্যে অন্যতম। মন্দিরের পাশাপাশি অনেকে ঘরেও ভোলেবাবার মাথায় জল ঢেলে সংসারের মঙ্গল কামনা করেন।
এই শ্রাবণ মাস হল বাবার মাস। এই মাসে বহু মহিলারা সারাদিন উপোষ থেকে বাবার মাথায় জল ঢালেন স্বামী সন্তান সংসারের মঙ্গলের জন্য। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত ছড়িয়ে রয়েছে বাবার অগণিত ভক্তকূল। সেইসঙ্গে রয়েছে নানান জাগ্রত মন্দিরও।
বাবা মহাদেব, সকলের পরম শ্রদ্ধা এবং আশ্রয়ের অপর নাম বাবা মহাদেব। বাবার মায়া ছড়িয়ে রয়েছে এজগত সংসারে। বাবা মহাদেবের বিভিন্ন তীর্থস্থানের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে ১৪১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অমরনাথ ধাম (Shri Amarnath Cave Temple) খুবই জাগ্রত। আসলে এটি একটি গুহার মধ্যে থাকা বরফের শিবলিঙ্গ। সমতল থেকে ৩,৮৮৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত পাহাড় ঘেরা এই গুহার পাহাড় গুলো সাদা তুষারে আবৃত থাকে বছরের বেশির ভাগ সময়ই।
জুন-জুলাই মাসে শ্রাবণী পূর্ণিমা থেকে শুরু করে জুলাই-আগস্ট মাসে গুরু পূর্ণিমার ছড়ি মিছিল অবধি চলে এই অমরনাথ যাত্রা। এই অল্প সময়কালেই জাতি ধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন বাবার দর্শনের জন্য। অমরনাথ গুহাতে চুইয়ে পড়া জল জমে শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করে। আবার এই শিবলিঙ্গের বৃদ্ধিও হয়, চন্দ্রকলার উপরে নির্ভরশীল থাকে। অনুমান করা হয় এই গুহা প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো।
এই জাগ্রত অমরনাথ ধামের উৎপত্তির কিন্তু বেশ রহস্যময় গল্প রয়েছে। শোনা যায়, অমরনাথের এই গুহাটি নাকি বুটা মালিক নামে এক মুসলমান মেষপালক আবিষ্কার করেছিলেন। আজকের দিনে যেখানে অমরনাথ গুহা, সেখানে নাকি কয়েকশ বছর পূর্বে এই মেশপালক এক সাধুর দেখা পান। সেই সাধু নাকি তাঁকে একটি কয়লা ভর্তি ব্যাগ উপহার দেন।
সেই উপহার নিয়ে কিছুদূর যেতেই তিনি দেখেন সমস্ত কয়লা সোনায় রূপান্তরিত হয়ে গেছে। অবাক হয়ে তৎক্ষণাৎ সেই সাধুর কাছে ধন্যবাদ জানাতে ফিরে যান ওই মেশপালক। কিন্তু গিয়ে দেখেন সাধু কই, সেখানে রয়েছে বাবা মহাদেবের অমরনাথ শৃঙ্গ। এভাবেই অমরনাথ গুহা এবং বাবার শৃঙ্গ আবিষ্কার হয়। তাই সব ধর্মের মানুষ এখানে তীর্থ করতে আসেন।
তবে এখানেই শেষ নয় এই মন্দিরের বিষয়ে আরও একটি রহস্যময় গল্প কিন্তু রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে শোনা যায়, অমরনাথের ওই গুহার মন্দিরে বসে ভগবান শিব যখন তাঁর স্ত্রী পার্বতীকে অমরত্ব সম্পর্কে জ্ঞানদান করছিলেন, তখন ওখানে কোন জীবিত মানুষ ছিল না। তবে সেখানে নাকি তাঁদের অগচরে পায়রার দুটি ডিম থেকে গেছিল। সেই ডিম ফুটে জন্ম নেওয়া পায়রা দুটিকে নাকি আজ ওই মন্দিরের মধ্যে উড়ে বেড়াতে দেখা যায়।
তবে এই মন্দিরের যাত্রা পথেও অনেক বাধাবিগ্ন পেরিয়ে তবেই ভগবানের দর্শনে যেতে হয়। পহলগাম রুট এবং এবং বালতাল রুট দিয়ে কঠিন পথ অতিক্রম করে তবেই পাওয়া যায় এই ভগবানের দর্শন। তবে যাত্রাপথে প্রতিদিনই রয়েছে যাত্রী সুবিধার্থে বিনা পয়সার লঙ্গরখানা।