বাংলা হান্ট ডেস্ক : অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে এবার সরব লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Ganguly)। আজিকরের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে উত্তাল গোটা দেশ-রাজ্য। এরই মাঝে যৌন হেনস্তার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় গোটা বাংলা বিনোদন জগৎ। কিছুদিন আগেই এই একই অভিযোগে সরগম ছিল মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রি। তারপরেই সেই আঁচ এসে পড়ে কলকাতার টলি পাড়ায়। ইতিমধ্যেই একাধিক যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠায় পরিচালক অরিন্দম শিলকে (Arindam Sil) শনিবারেই সাসপেন্ড করেছে ডিরেক্টর্স গিল্ড।
কি প্রতিক্রিয়া দিলেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Ganguly)?
তারপর থেকে নিজেদের উচ্ছাস জাহির করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একাধিক অভিনেত্রী। সাসপেন্ড হওয়ার পর পরিচালক অরিন্দম শীল অভিযোগ করেছিলেন যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে মুচালিকা দেওয়ার সময় তাকে মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে ‘অনিচ্ছাকৃত’ শব্দটি বাদ দিতে বলা হয়েছিল। পরিচালকের অভিযোগ সেই লিখিত বয়ানকেই নাকি তাঁর বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
‘অনিচ্ছাকৃত’ প্রসঙ্গে কি বলছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়?
এবার এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন খোদ পরিচালক প্রযোজক তথা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Ganguly)। এদিন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Ganguly) স্পষ্ট জানিয়েছেন, পুরো ব্যাপারটাই অভিযোগকারিণী এবং অভিযুক্তের মধ্যে। তাঁর কথায়, ‘অভিযোগকারিণীর যে দাবি ছিল তাতে উনি সদুত্তর উত্তর দিতে পারেননি। অভিযোগকারিণী জানিয়েছিলেন, ‘উনি আমাকে যে কিস করেছিলেন এবং সেটা চিত্রনাট্যে ছিল না।’ তখন গা বাঁচাতে পরিচালক বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, স্ক্রিপ্টে ছিল না কিন্তু ওটা একটা দুর্ঘটনা ছিল।’ কিন্তু মেয়েটি তা মেনে নেয়নি। তাই অভিযোগকারিণী পরিচালককে পাল্টা বলেছিলেন, ‘এটা দুর্ঘটনা নয় আপনি ইচ্ছাকৃত করেছিলেন, আর তার পরে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোর কি খারাপ লেগেছে? বল?’ এই কথার ভিত্তিতে ‘অনিচ্ছাকৃত’ শব্দটি খাটে না।’
সেইসাথে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Leena Ganguly) এদিন বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘কমিশন কাউকে জোর করে পারে না। তাই অরিন্দম শীল-ও ব্যতিক্রম নয়। তাঁকে বলা হয়েছিল তিনি চাইলে মুচলেকা লিখতে পারেন। তাই সেখানে ‘ইফ ইউ ফিল’ শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছিল। পরিচালক তখন কমিশনকে বলেছিলেন বিষয়টি ড্রাফ্ট করে দিতে। তারপর তিনি সেখানে সই করে দেবেন।
আরও পড়ুন : ‘মেয়ে বলেই ….’ আজীবন কীসের আক্ষেপ থেকে যাবে শোলাঙ্কি রায়ের?
কিন্তু লীনার দাবি, ‘সেটাতো আমরা করতে পারি না। আপনার মুখের কথা আমরা বসাতে পারি না। আপনি যেটা মনে করছেন সেটা লিখুন। আপনি যদি মনে করেন মেয়েটি যে অভিযোগ করেছে আপনি তাঁর কথাকে মান্যতা দিচ্ছেন তাহলে সেভাবে লিখবেন। সেক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত শব্দটি খাটে না। সেই সময় উনি বলেছিলেন, ‘ঠিক আছে আমি তাই লিখে দিচ্ছি। কিন্তু আপনি দেখবেন যেন ব্যাপারটা যেন এখানেই থেমে যায়।’
এছাড়া ‘অনিচ্ছাকৃত’ শব্দ বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে লীনা পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘উনি বাদ দিলেন কেন? উনি কিছুই না লিখতে পারতেন। সেই দায় তো ওনার ছিল। সেটা তো আমরা বলেইছি। ‘ইফ ইউ ফিল ইউ ক্যান রাইট’, এই কথাটাই বলা হয়েছিল। আমি তো আপনাকে জোর করতে পারি না। আপনি যদি মনে করেন আপনি লিখবেন। অভিযোগকারিণীর দাবি তো উনি খণ্ডাতে পারেননি। উনি বলছেন অ্যাক্সিডেন্ট, অভিযোগকারিণী বলছেন না তা নয়। আপনারাও তো বিশাখা গাইডলাইনের কথা জানেন, তাই না!’