বাংলাহান্ট ডেস্ক: হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের জেরে বিপর্যয় নেমে এসেছে আদানি গ্রুপের উপর। গত এক সপ্তাহে শুধু কোটি কোটি টাকা ক্ষতিই হয়নি গৌতম আদানির (Gautam Adani)। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকাতেও পরিবর্তন ঘটেছে। ভারতের শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের রোষের পড়েছে আদানি গ্রুপের সংস্থাগুলি। কারণ আদানির শেয়ারের দাম পড়েছে হু হু করে। লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন (LIC) ও স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (SBI) মতো বড় ঋণদাতারা আদানিকে ঋণ দিয়েছিলেন।
তবে এই ঋণ সীমা ছাড়ায়নি। এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman)। তিনি জানিয়েছেন, আদানি গ্রুপ বিপদে পড়লেও LIC ও SBI-এর বিপদের সম্ভাবনা নেই। এমনকী, ভারতীয় অর্থনীতির উপরেও তেমন প্রভাব পড়বে না বলেই জানিয়েছেন তিনি। আদানি গ্রুপের বিপর্যয়ের পর নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠছিল, তবে কি LIC ও SBI-এরও চরম বিপদ হতে চলেছে? এই প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “LIC ও SBI-এর মতো বড় ঋণদাতা সংস্থাগুলি অতিরিক্ত পরিমাণে ঋণ দেয়নি আদানি গ্রুপকে (Adani Group)। আদানিদের অনুমোদিত সীমার মধ্যেই ঋণ দিয়েছে সংস্থাগুলি। তাই এগুলিকে নিয়ে তেমন কোনও আশঙ্কার কারণ নেই। ভারতে স্থিতিশীল সরকার রয়েছে। অর্থনীতিও চাঙ্গা রয়েছে।” ভারত আগের মতোই আছে বলে জানান তিনি।
গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের (Hindenburg Research) দেওয়া রিপোর্টের জেরে তোলপাড় শুরু হয় বিশ্বজুড়ে। আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার কারচুপি, অর্থপাচার সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলে সংস্থাটি। তারপর থেকেই ধস নামে আদানি গ্রুপের শেয়ারে। তাদের অধীনে থাকা সাতটি সংস্থারই শেয়ারের দামের পতন হতে থাকে।
হিন্ডেনবার্গ ও আদানি গ্রুপের মধ্যে শুরু হয় বিবাদ। হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় আদানি গ্রুপের তরফে। মার্কিন সংস্থাটির তরফেও জানানো হয়, সব রকম আইনি লড়াই করার জন্য প্রস্তুত তারা। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের জবাবে পাল্টা একটি রিপোর্ট পেশ করে আদানি গ্রুপ। সেখানে তারা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে।
আদানি গ্রুপকে মূলত ৮৮টি প্রশ্ন করেছিল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। আদানি গ্রুপ জানায়, এর মধ্যে ৬৫টি প্রশ্নের উত্তর জনসমক্ষে রয়েছে। বাকি ১৮টি প্রশ্নের সঙ্গে আদানি গ্রুপের কোনও সম্পর্ক নেই। এবং শেষ ৫টি প্রশ্নকে একেবারেই অর্থহীন। উল্লেখ্য, শীঘ্রই আদানি গ্রুপের এফপিও (FPO) আসার কথা ছিল। তবে এই বিবাদের জেরে গত বুধবার তারা জানিয়ে দেয়, আপাতত সেটি স্থগিত রাখা হচ্ছে।