দ্বাদশ পর্যন্ত পড়াশুনা, অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক… কেমন ছিল শ্রদ্ধাকে ৩৫ টুকরো করা আফতাবের জীবন?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে (Shraddha Walkar) খুন করে নিজের আসল চরিত্র সকলের সামনে প্রকাশ করে ফেলেছে আফতাব আমিন পুনাওয়ালা (Aftab Amin Poonawala)! সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) আফতাবের একাধিক পোস্ট দেখে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। হত্যার পর প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে নতুন কেনা ফ্রিজে ভরে রেখেছিল যে যুবক, তার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইলে ‘নারীবাদি’ পোস্টে ভর্তি।

মহারাষ্ট্রের ভাসাই স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে এলএস রাহেজা কলেজ থেকে বিএমএস ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক হন পুনাওয়ালা। এরপর হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়েও পড়াশোনা করে এই যুবক এবং কয়েক বছর শেফ হিসেবেও কাজ করে। সেই সময়ই কীভাবে মাংস কাটতে হয় সে সম্পর্কে দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ নেয় আফতাব, আর সেই ট্রেনিংই ওয়াকারের শরীর কাটাতে ব্যবহার করে বলেই গোয়েন্দাদের দাবি।

পুনাওয়ালার পারিবারিক বন্ধু সূত্রে জানা যাচ্ছে যে বরাবরই একটু অন্য মনে থাকা আফতাব জীবনে কী করবেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন। সেই পারিবারিক বন্ধুর কথায়, ‘ এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে এই ধরণের এক জঘন্য হত্যাকাণ্ড করেছে সে,’ এমনটাই ওই পারিবারিক বন্ধুকে উদ্ধৃত করে জানায় সংবাদমাধ্যমকে। অভিযুক্তের পরিবার এবং বন্ধুরা জানায়, সে বরাবরই একজন সাধারণ ছাত্র ছিল এবং কখনও কোনও সাতেপাঁচে থাকেনি।

আফতাব পুনাওয়ালা- দ্য ফুড ব্লগার ২৯ বছর বয়সি আফতাব ইনস্টাগ্রামে একটি ফুড ব্লগ অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতেন। hungrychokro_escapades ব্যবহারকারী নামের অ্যাকাউন্টটিতে 28,500 ফলোয়ার রয়েছে এবং এতে অনেক ভারতীয় এবং চাইনিজ খাবারের বেশ কিছু ছবি রয়েছে। অ্যাকাউন্টটি অবশ্য ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। তার ফেসবুক ফিডে আরও দেখা যায় যে তিনি বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন।

আফতাবের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটলে ভয়ংকর খুনিকে চেনা দায়। ২০১৭ সালে মুম্বইয়ের আবহাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পোস্ট করেন আফতাব। জঙ্গল কেটে মেট্রো পরিষেবা বর্ধিত করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করে। জঙ্গল কাটার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে পিটিশন দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। এছাড়াও ২০১৬ ও ২০১৫ সালে বিভিন্ন পোস্টে জল সংরক্ষণ, কালী পুজোয় বাজি ফাটনোর বিরোধিতা, মহিলাদের উপর অ্যাসিড হামলার বিরোধিতা করে পোস্ট করে সে। এমনকী এক বার এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সমর্থনে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিতে রামধনু রঙের প্রলেপ লাগায় আফতাব।

জানা যায় আরও তথ্য। একটি অনলাইন ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে নানা মহিলার সঙ্গে আফতাবের পরিচয় হত। তাঁদের সঙ্গে গল্প করে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতেন। তার পর সেই সব মহিলাদের ডাকতেন বাড়িতে। তাঁদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতেন আফতাব। গত কয়েক মাসে নানা মহিলার সঙ্গে ওই বাড়িতেই তাঁর শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। যে মহিলারা আফতাবের সঙ্গে সময় কাটাতে তাঁর বাড়িতে আসতেন, শ্রদ্ধার খুন সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা ছিল না। বাড়িতে নতুন ফ্রিজ কিনেছিলেন আফতাব। ঘরের এক কোণে সেই ফ্রিজ রাখা থাকত।

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর