ধারা ৩৭০ অপসারণের পর কিভাবে কাশ্মীরের পরিবর্তন হচ্ছে তা চোখে পড়ার মতো।বিগত কয়েক দশক ধরে যেখানে উপদ্রবীদের কারণে হিন্দু সংস্কৃতি কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। তা এখন পুনরায় জেগে উঠতে শুরু হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে (Srinagar) ডাল লেকের তীরে অবস্থিত শঙ্করাচার্য শিব মন্দিরে (Shankaracharya temple) অনেক বছর পর মহা শিবরাত্রিক উপলক্ষে বেশ জাঁক-জমক দেখা গেল।
সন্ত্রাসীদের ভয়ে যেখানে আগে ভক্তরা যথাযথভাবে যেতে পারত না, সেখানে প্রচুর সংখ্যক ভক্ত একসাথে জড়ো হয়ে মহাদেবের দর্শন করে। শুক্রবার (২১ শে ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পরে এমন দৃশ্য দেখা গেল, যা গত কয়েক দশকে খুব কম বা দেখা যায়নি বললেই চলে। পুরো মন্দিরটি আলোক দিয়ে আলোকিত করা হয়েছিল এবং ফুল দিয়ে সজ্জিত ছিল। উৎসব উপলক্ষে মহা অভিষেক সহ আরও অনেক ধরণের পূজা অর্চনার আয়োজন করা হয়েছিল।
জম্মু ও কাশ্মীর ভ্রমণকারী পর্যটকরাও এই উপলক্ষে ভগবান শিবের দর্শন করেছিলেন। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পোস্টে থাকা সশস্ত্র বাহিনীর জোয়ানরাও দেবাদিদেব ভগবান শিবের মন্দিরে গিয়ে তাঁর আশীর্বাদ নিয়েছিলেন। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রাকেশ ভান শাস্ত্রী বলেছিলেন; “শিবরাত্রি উপলক্ষে ভোর থেকেই পূজা শুরু হয়। আমরা একটি বিশেষ পূজাও আয়োজন করেছি, যাতে স্থানীয় ভক্ত ও সুরক্ষা বাহিনীর কর্মীরা অংশ নিয়েছিল। এই মহাশিরাত্রি উৎসব উপলক্ষে আমরা জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেছি। ”
ये हैं असली आज़ादी
हमने तो ले ली आज़ादीदशकों के बाद आज श्रीनगर के शंकराचार्य मंदिर में महाशिवरात्रि की रौनक
हर हर महादेव pic.twitter.com/khKBxU2gJu
— Kapil Mishra (@KapilMishra_IND) February 21, 2020
লোকেরা লম্বা লাইন নিয়ে শিবকে ফুল, দুধ এবং জল উৎসর্গ করেছিল। এ সময় ভক্তরা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্যও প্রার্থনা করেছিলেন। মিডিয়ার সাথে আলাপকালে ভক্তরা বলেছিলেন যে যারা কাশ্মীর বেড়াতে আসবেন তাদের অবশ্যই শঙ্করাচার্য শিব মন্দিরটি দেখতে হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে মহাশিবরাত্রিকে ‘হেরাথ’ বলা হয়। মন্দির ও আশেপাশের এলাকায় ‘বম বম ভোলে’ শোনা গিয়েছিল। বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত ভক্তরা বলেছিলেন যে গত কয়েক বছরে এটি সম্ভব হয়নি বলে একভাবে এখানে এসে তাদের পুরানো স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
প্রাক্তন বিধায়ক কপিল মিশ্র বলেছিলেন যে কয়েক দশক পরে শঙ্করাচার্য শিব মন্দিরের সৌন্দর্য দেখতে পাওয়াই আসল স্বাধীনতা, আর আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছি। একজন প্রবীণ সাংবাদিক লিখেছিলেন যে আমরা ভুলে গিয়েছিলাম যে দক্ষিণের সাধক শঙ্করাচার্যের একটি মন্দিরও সুদূর উত্তরে শ্রীনগরে রয়েছে। জবলপুরের বিধায়ক ইন্দু তিওয়ারি মন্দিরের একটি জ্বলজ্বল ফটো শেয়ার করে লিখেছেন যে আমাদের জন্য এটি ভাল দিন।
কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য মহাশিবরাত্রির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে এবং এই উৎসবটি তিন দিনের। প্রথম দুই দিন হল বিভিন্ন ধরণের উপাসনা এবং তৃতীয় দিন সকলেই একসাথে এটি উদযাপন করে। এটাও লক্ষণীয় যে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা মুসলমানদের এই উৎসবের অংশ বানিয়ে এসেছে এবং তাদের ডেকে খাবারও খাওয়ানো হয়।