বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পাওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু তার চেয়েও কঠিন সেই জাতীয় দলে নিজেকে ধরে রাখা। কারণ ভারতে ক্রিকেট প্রতিভার যোগান এতটাই বেশি যে সবসময়ই দলের বাইরে এমন কিছু ক্রিকেটার প্রতীক্ষায় থাকে সবসময়ই ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে থাকেন। কিন্তু এমন কিছু ক্রিকেটার রয়েছেন যারা দলে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য হয়েও নির্বাচকদের সাথে ঝামেলা করার কারণে আর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। এমন কিছু ক্রিকেটারের কথাই এখানে তুলে ধরা হলো।
আম্বাতি রায়ডু:
নির্বাচকদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার কারণে ভুগতে হয়েছে একসময় ভারতীয় দলে মিডল অর্ডারে সুযোগ পাওয়া আম্বাতি রায়ডুকে। আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯ শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় দলে আম্বাতি রায়ডুর জায়গায় বিজয় শঙ্কর-কে জায়গা দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক এমএসকে প্রসাদ বলেছিলেন যে বিজয় শঙ্কর দলকে 3ডি বিকল্প (ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং) সরবরাহ করবেন। এই বক্তব্যের পর অম্বাতি রায়ডু নির্বাচকদের কটাক্ষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন, ‘বিশ্বকাপ দেখার জন্য আমি একজোড়া থ্রিডি চশমার অর্ডার দিয়েছি।’ এর ফল ভুগতে হয়েছে রায়ডু-কে। আর জাতীয় দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি তিনি।
মুরলি বিজয়:
২০১৮ সালে যখন মুরলি বিজয় অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলেন। পারফরম্যান্স একেবারেই ভালো ছিল না তার। এরপর মুরলি বিজয় ভারতীয় দল থেকে থেকে বাদ পড়েন এবং ময়ঙ্ক আগরওয়াল ভারতীয় দলে সুযোগ পান। বিজয় তার শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই বছরের ডিসেম্বরে। এরপর ময়ঙ্ক আগরওয়াল এবং পরে রোহিত শর্মা দলে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তার প্রথম একাদশে ফেরার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচকদের চক্ষুশুল হয়ে পড়েন বিজয়। ভারতীয় দলে তার দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
ওয়াসিম জাফর:
ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেট প্রতিযোগিতাগুলিতে অসাধারণ পারফরম্যান্স করা ওয়াসিম জাফর ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর কগুব বেশি প্রভাবিত করতে না পারায় তিনি যখন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন, তখন তিনি নির্বাচকদের প্রশ্ন করে বলেছিলেন, ‘আমি জানি না কীভাবে নির্বাচকদের প্রভাবিত করতে হয়। আমি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৩,০০০ রান করেছি। মনে হচ্ছে না তাদের এদিকে নজর আছে। এরপর আর কোনওদিন তার নাম বিবেচনা করে দেখেননি নির্বাচকরা।
ফইয়জ ফজল:
ইনার নেতৃত্বে বিদর্ভ রঞ্জি ট্রফি জিতেছিল। নির্বাচকদের দ্বারা ক্রমাগত উপেক্ষা করা হয়েছিল। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। ৫৫ রানের একটি ইনিংসও খেলেন তিনি। কিন্তু তারপরেও ফইয়জ ফজলকে ভারতীয় দল এবং ইন্ডিয়া এ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট করেছিলেন। ফলস্বরূপ যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও আর কোনওদিন সুযোগ পাননি।
মনোজ তিওয়ারি:
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শতরান, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এক ম্যাচে বল হাতে চার উইকেট, আরেক ম্যাচে ৬৫। এরপরেও জাতীয় দলে নিজেকে নিয়মিত করতে পারেননি। কখনও চোট, কখনও নির্বাচকদের উপেক্ষা। কিন্তু এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচকদের বিষ নজরে পড়ে যান। আর কোনওদিনই ভারতীয় দলে ফেরা হয়নি তার।