বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার অনেক আগে থেকেই দলবদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বর মাসে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের মুখে প্রায় একটাই কথা শোনা গিয়েছিল, সেটি হল ‘দলে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না। ডিসেম্বর মাসে মেদিনীপুরের জনসভায় অমিত শাহের হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেদিনই তৃণমূলে বিরাট ভাঙনও দেখা গিয়েছিল।
একাধিক নেতা বিধায়ক এবং একজন প্রাক্তন এবং বর্তমান তৃণমূল সাংসদ সেদিন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর তৃণমূল সরকারে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক দিল্লী গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেদিন বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন।
৫ ই মার্চ কালীঘাট থেকে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছিলেন। প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হওয়ার পর জেলায় জেলার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম দলবল নিয়ে নিজের দলীয় কার্যালয়েই ভাইংচুর করেছিলেন। তৃণমূলের দাপুটে বিধায়ক সোনালী গুহ টিকিট না পেয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনেই কেঁদে ফেলেছিলেন।
৫ তারিখে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দলে বড়সড় ভাঙন দেখা দেয়। একাধিক নেতা, বিধায়ক, টিকিট প্রত্যাশীরা তৃণমূলের সঙ্গে ত্যাগ করেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার বিজেপিতে যোগ দেন টিকিট পাওয়ার আশায়। কিন্তু সবার আশা পূর্ণ করতে পারেনি বিজেপি। কয়েকজনকে টিকিট দিলেও, বেশীরভাগ বিক্ষুব্ধদের টিকিট দেয়নি বিজেপি।
প্রথমেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সোনালী গুহর কথা বলি। টিকিট না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সোনালী গুহ। এরপরই বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বিজেপিতে যোগও দেন। কিন্তু বিজেপির তরফ থেকে ওনাকে এখনও টিকিট দেওয়া হয়নি। তবে এখনও ১৮ টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাকি আছে বিজেপির। দেখা যাক সোনালী গুহ সেখানে সুযোগ পান কি না।
এরপরই নাম আসে সরলা মুর্মুর। যদিও সরলা দেবী টিকিট পেয়েছিলেন। কিন্তু টিকিট পাওয়ার পরেও কেন্দ্র পছন্দ না হওয়ায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বিজেপি সরলা মুর্মুকেও টিকিট দেয়নি। হাওড়ার শিবপুরের তৃণমূল বিধায়ক জটু লাহিড়ীও টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি ওনাকে টিকিট দেয়নি।
বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বিখ্যাত ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাসও টিকিট না পাওয়ার ক্ষোভে তৃণমূল ছেড়েছিলেন। ওনাকেও এখনও প্রার্থী করেনি বিজেপি। নদীয়া জেলার দাপুটে তৃণমূল নেতা গৌরীশঙ্কর দত্ত নিজের ছেলে আর দলবল নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। নদীয়ার তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। বিজেপি ওনাকেও টিকিট দেয়নি।
মমতা সরকারের প্রতিমন্ত্রী তথা তপনের বিধায়ক বাচ্চ হাঁসদাও টিকিট না পেয়ে পদ্মের শরণে গিয়েছিলেন। বিজেপি ওনাকেই প্রার্থী করেনি। উনি এখন আবার পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার কথা বলছেন।