বাংলা হান্ট ডেস্ক : ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ (The Kerala Story) নিয়ে বিতর্ক চলছেই। গতকালই পশ্চিমবঙ্গে সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই পরিস্থতিতে মমতার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ভারত বিরোধী’ এবং ‘হিন্দু বিরোধী’ বলে তোপ দাগেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে মমতা ‘মহিলা বিরোধী’।
লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সিনেমাটি আইএসআইএস জঙ্গি সংগঠন নিয়ে, অন্য কিছু নয়। এর অর্থ, এই সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তিনি কিছু লুকোতে চাইছেন।’ লকেট আরও বলেন, ‘বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের তৈরি সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাঙালিদের নামে ভোট চান তবে মুসলিমদের নিয়ে তৈরি একটি সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তাঁর মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক যাতে অটুট থাকে, এর জন্য এই পদক্ষেপ করেছেন তিনি।’
গতকালই এই সিনেমার সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জানিয়ে দেন, রাজ্যের কোনও সিনেমা হলেই দেখানো যাবে না এই সিনেমা। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘এই সিনেমায় যে যব দৃশ্য দেখানো হয়েছে তা রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যে বিপজ্জনক।’ এর আগে তামিল নাড়ুর সিনেমা হল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, তবল তা তামিলনাড়ু থিয়েটার ওনার্স অ্যাসোশিয়েশনের সিদ্ধান্ত।
এই প্রথম দেশের কোনও রাজ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ হল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। মমতার এই ঘোষণার পরই একে একে বিজেপি নেতারা তোপ দেগেছেন তাঁকে। লকেটের আগে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা সরব হয়েছেন তৃণমূল সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আইন শৃঙ্খলা সামলানোর ক্ষমতা নেই। সিনেমা একটা বাহানা মাত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান হচ্ছে অন্ধেরা কায়েম রহে। সত্যের মুখোমুখি হবেন না। সত্য কাউকে জানতে দেবেন না। যে সিনেমাটা তৈরি হয়েছে সেন্সর বোর্ড তাকে অনুমোদন দিয়েছে। সারা দেশে দেখানো হচ্ছে। বাংলায় কেন দেখতে পাবে না লোকেরা। আর যদি আপত্তি থাকে তাহলে আদালতে যেতে পারেন। আপনি কীসের প্রশাসক? একটা সিনেমার জন্য আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হয়ে যাবে? আইন কানুন আছেটা কোথায় পশ্চিমবঙ্গে? নিষিদ্ধ করার রাজনীতির বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলন হয়েছে, সিনেমা হয়েছে। সেখানেই সিনেমাকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।’
তোপ দেগেছেন শুভেন্দু অধিকারীও এই নিয়ে টুইট করে লেখেন, ‘আমি যতটুকু জানি, কেরলে কট্টরপন্থীরা যেভাবে মহিলাদের মগজ ধোলাই করে, তাই এই সিনেমাতে তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমাতে দেখানো হয়েছে, কী ভাবে কেরলে মহিলাদের ধর্মান্তরিত করে আফগানিস্তান, ইয়েমেন, সিরিয়ায় পাঠিয়ে আইএসআইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হয়ে থাকে। আইএসআইএস এবং তাদের কার্যপদ্ধতির পর্দা ফাঁস করে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি আইএসআইএস-এর প্রতি সহানুভূতিশীল?’ তবে বিজেপি নেতাদের একের পর এক আক্রমণের পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের তরফ থেকে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।