বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর এই মে মাসেই একদিকে যেমন বাংলা বিধ্বস্ত হয়েছিল আমফানের তান্ডবে, তেমনি অন্য এক তাণ্ডবে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল অন্যান্য রাজ্যগুলির। সেই তান্ডবের নাম পঙ্গপাল। প্রায় ২৭ বছর বাদে গতবছর পঙ্গপালের এমন মারাত্মক আক্রমণে ফসল হারিয়েছিলেন অনেক কৃষকই। মরুভূমির এই পঙ্গপালদের পাওয়া যায় মূলত পূর্ব আফ্রিকা এবং সুদানে। এখান থেকে সৌদি আরব, ইরান এবং পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ করে তারা। গত বছরেই পঙ্গপালের আক্রমণে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছিল মধ্যপ্রদেশ, ঝাঁসি, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চল।
গতবছর ছত্তর সিং নামের এক ৬০ বছর বয়সী কৃষক জানিয়েছিলেন, পঙ্গপালের এ ধরনের হামলা গত ৩০ বছরে দেখেননি তিনি। তবে ফের একবার ফিরে আসছে সেই দুঃস্বপ্নের দিন। এবারও ভারতে পঙ্গপালের হামলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। উত্তর প্রদেশের কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, জয়সলমীরের কাছাকাছি ফের একবার হদিস মিলেছে পঙ্গপালের ঝাঁকের। তাই ফের একবার মে মাসের শেষের দিক করে ফসলের ক্ষেত গুলিতে হামলা করতে পারে পঙ্গপাল। ইতিমধ্যেই সরকারি তরফে জারি করা হয়েছে সর্তকতা। গত বছর প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট করেছিল এই পঙ্গপাল। কৃষি বিভাগের মতে মে মাসের শেষে ফের একবার উত্তরপ্রদেশে প্রবেশ করবে এই পতঙ্গের ঝাঁক। গতবছর থালা-বাসন বাজিয়ে, কখনোবা টায়ার পুড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করেছিলেন কৃষকরা। এমনকি পরবর্তী ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার থেকেও রাসায়নিক ছড়াতে হয়েছিল।
এবার ঐ ফসলভুকের হানার আশঙ্কায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন কৃষকরা। কৃষি বিভাগের আধিকারিক রাম প্রবেশের মতে, খাবারের খোঁজে চলতি মাসেই পাকিস্তান থেকে প্রায় কয়েক লক্ষ পঙ্গপাল এসেছে এদেশে। এই মুহূর্তে জয়সালমীরে ঘাঁটি গেড়েছে তারা। তবে আগামী দিনে আগ্রা এবং উত্তর প্রদেশেও প্রবেশ করতে পারে এই পঙ্গপালের দল। কারন আমরা এই মুহূর্তে সবজি চাষ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে। দেশের অন্যত্র মাটি তেমন ফসল না থাকলেও আগ্রা ব্যতিক্রম। আর সেই কারণে, এক রাতেই সব থেকে বেশি হতে পারে পঙ্গপালের আক্রমণ। এই মুহূর্তে কৃষকদের ফসলের সামান্য রাসায়নিক ব্যবহার করার কথাও বলা হয়েছে। ভারতে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করলে আস্তে আস্তে থর মরুভূমি হয়ে ফিরতি পথ ধরে এই পঙ্গপালের দল। কিন্তু তার আগেই কৃষকদের কয়েক লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট করা তাদের কাছে কোন ব্যাপার নয়। আর সেই কারণেই এবার অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে রয়েছে প্রশাসন। যদিও বাংলা এই মুহূর্তে আক্রমণের সম্ভাবনা তেমন নেই বললেই চলে। কারণ মাটি তেমন ফসল নেই বাংলায়। তবে এক এই মহামারী তার ওপর কষ্ট করে ফলানো ফসল ফের একবার নষ্ট হলে চাষিরা যে রীতিমতো বিপদে পড়বেন এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।