বাংলাহান্ট ডেস্ক: প্রিয় শিল্পীর অনুষ্ঠানে গিয়ে পছন্দের গান শোনার আবদার করে থাকেন অনেক শ্রোতাই। শিল্পীরা যথাসম্ভব মেটানোর চেষ্টা করেন সেসব অনুরোধ। কিন্ত পছন্দের গান না হলেই অপমান, গালিগালাজ এমনটা কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না নামীদামী শিল্পীদের অনুষ্ঠানে। অন্তত এতদিন দেখা যেত না। কিন্তু গায়িকা লোপামুদ্রা মিত্র (Lopamudra Mitra) যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন তা শুনলে বোঝা যায় সত্যিই যুগ পালটাচ্ছে।
বাংলা গান গাওয়ায় অপমান, হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে লোপামুদ্রাকে। সম্প্রতি এই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা নিজের মুখেই বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। এক ওয়েব প্ল্যাটফর্মে সেই অপমানজনক ঘটনার কথা জানান লোপামুদ্রা। বাংলা গান গাওয়ায় তাঁকে রীতিমতো অপমান করে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলা হয়েছিল।
মাচা শো এখনো বিনোদনের যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গ্রামাঞ্চলে বা মফস্বলে মাচা শোতে গিয়ে অনুষ্ঠান করে আসেন তরুণ থেকে নামীদামী অভিজ্ঞ শিল্পীরাও। এমনি আমডাঙায় পুলিশের এক অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র। ধাধিনা নাতিনা, আয় আয় কে যাবি, হৃদ মাঝারে রাখব-র মতো তাঁর কণ্ঠে জনপ্রিয় সব গানগুলিই শোনাচ্ছিলেন তিনি।
কিন্তু লোপামুদ্রাকে হতভম্ব করে দিয়ে শোরগোল শুরু হয় শ্রোতাদের মধ্যে। গায়িকা বলেন, তাঁর গান কেউ শুনছিলেনই না। খালি বলে যাচ্ছিলেন, ‘অ্যাই নেমে যা, অ্যাই নেমে যা’! শুধু তাই নয়, সামনের সারিতে বসে কয়েকজন ছেলেকে সমানে বিড়ি খেতে দেখে আরোই রেগে গিয়েছিলেন লোপামুদ্রা। সরাসরি বলেও উঠেছিলেন, ‘খা বিড়ি খা। বাড়িতে মা বোন নেই? তুই মরে গেলে কার কী যায় আসবে বল?’
লোপামুদ্রা জানান, এত বছরের সঙ্গীত জীবনে সেদিনের মতো অপমানিত আর কোনোদিন হননি তিনি। কিন্তু বিরক্তি চেপে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। সরাসরি শ্রোতাদের উদ্দেশে বলে উঠেছিলেন, তাঁকে এক ঘন্টার জন্য ডাকা হয়েছে। তার আগে কে তাঁকে মঞ্চ থেকে নামাতে পারে সেটা তিনিও দেখবেন’। তারপরে অবশ্য আর কেউ অপমানজনক মন্তব্য করার সাহস দেখাননি।
কিন্তু লোপামুদ্রা একা নন। ইদানিং এমন টুকরো টুকরো ঘটনার খবর মাঝে মধ্যেই উঠে আসছে। গত বছরেই ইমন চক্রবর্তীর একটি অনুষ্ঠানে এমন ঘটনার কথা শোনা গিয়েছিল। তাঁকে বলা হয়েছিল, বাংলা গানে নাচা যাচ্ছে না। উত্তরে ইমন বলেছিলেন, বাংলা গান পছন্দ না হলে পাতলি গলি সে নিকল! শুধু বাংলা না, কর্ণাটকের এক অনুষ্ঠানে হিন্দি গান গেয়েও আক্রান্ত হন কৈলাশ খের। হিন্দি না, কন্নড় গান গাইতে বলা হয়েছিল তাঁকে। শিল্পীদের উপরে বারবার এমন আক্রমণ, অপমান চিন্তা বাড়াচ্ছে তাদেরও।