ক্যানসার কেড়ে নেয় বাবাকে, শত অপমান সহ্য করেও চা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন MA পাশ করা যুবতী

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে স্টার্টআপের (Startup) একটি “ট্রেন্ড” শুরু হয়েছে। এমনকি, দেশের প্রতিটি প্রান্তেই এই রেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, এখন চায়ের দোকান করা শুধুমাত্র অভাবী এবং গরিব মানুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও অনেকেই এই কাজের মাধ্যমে নিজেদের উদ্যোগ শুরু করেছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই স্টার্টআপগুলির মাধ্যমে হচ্ছে লাভও। ইতিমধ্যেই “MBA Chai Wala” প্রশান্ত বিল্লোরের কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু, এবার সামনে এল “MA Chaiwali” নামের এক লড়াকু যুবতীর প্রসঙ্গ .।

১২ বছর ধরে তিনি বিক্রি করছেন চা: মূলত, উত্তরাখণ্ডের অঞ্জনা রাওয়াতই হলেন “MA Chaiwali”। এমনকি, তিনি গত ১২ বছর ধরে চা বিক্রি করছেন। যদিও, এখন তিনি উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে। চায়ের দোকানকে সম্বল করেই তিনি তাঁর সংসার চালাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, যখন তাঁর বয়স মাত্র ১৭ ছিল, তখন থেকেই অঞ্জনা তাঁর বাবার চায়ের দোকানে এসে বসতে শুরু করেন। এদিকে, দুর্ভাগ্যবশত ক্যান্সার কেড়ে নেয় তাঁর বাবাকে। এমতাবস্থায়, পরিবারের বড় মেয়ে হওয়ায় সব দায়িত্ব এসে পড়ে অঞ্জনার কাঁধে।

MA পাশ করেছেন অঞ্জনা: এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চায়ের দোকান চালাচ্ছেন তিনি। এদিকে, অঞ্জনা যখন প্রথম চায়ের দোকানে বসতে শুরু করেছিলেন, তখন অনেকেই তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করতেন। যদিও, অঞ্জনা সেইসবকে পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজ করতে থাকেন। অথচ, আজ সেই লোকেরাই তাঁর দোকানে এসে চা পান করেন এবং তাঁর প্রশংসাও করেন।

এই প্রসঙ্গে অঞ্জনা জানান, তাঁর আগে এই দোকানটি তাঁর বাবা গণেশ চালাতেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাবা মারা যাওয়ার পর দোকান চালানোর পুরো দায়িত্ব পড়ে অঞ্জনার ওপর। ১৭ বছর বয়স থেকেই অঞ্জনা দোকানে বসতে শুরু করেন। তিনি এই দোকানে কাজ করার পাশাপাশি তাঁর পড়াশোনাও শেষ করেছেন।

chai anjana rawat

অঞ্জনার কথায়, তিনি যখন চায়ের দোকানে বসতে শুরু করেন, তখন অনেকেই তাঁকে নিয়ে মজা করতেন। এমনকি, আশেপাশের লোকজন তাঁর উদ্দেশ্যে কটূক্তিও করেন। সবাই বলতেন, এটা ছেলেদের কাজ। যদিও, অঞ্জনা এসব নিয়ে কখনও হতাশ হননি। জানিয়ে রাখি যে, এই চায়ের দোকান চালিয়েই বোনকে বিয়ে দিয়েছেন অঞ্জনা। পাশাপাশি, তিনি তাঁর MA-র পড়াও শেষ করেছেন। অঞ্জনা জানিয়েছেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই একটি বাড়ি তৈরির জন্য ঋণ নিয়েছেন এবং অন্যান্য জিনিসের খরচও বহন করেন। দোকানের মাধ্যমেই তিনি সামলাচ্ছেন সব।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর