বাংলাহান্ট ডেস্ক : গত ৩০০ বছর ধরে জগদ্ধাত্রীদেবীর (Maa Jagadhatri) আরাধনা করে আসছে বর্ধমানে (Burdwan) কালনার ধাত্রীগ্রাম। লোকমুখে শোনা যায়, এই গ্রামের নামকরণ হয়েছে জগদ্ধাত্রীর (Jagadhatri) নামেই। কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে ব্রহ্মশাসন মহল্লা নামক একটি জনপদ ছিল নদিয়া জেলায়।
ধাত্রীগ্রামের জগদ্ধাত্রী (Maa Jagadhatri)
ধাত্রীগ্রামে এসে একটা সময় পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক পণ্ডিত। সেই পন্ডিত গ্রামের শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন কয়েকটি সংস্কৃত শিক্ষার গুরুকুল। এই গুরুকুলে নবদ্বীপ থেকে পন্ডিতরা এসে শিক্ষাদান করতেন শিক্ষার্থীদের।
গ্রামবাসীরা বলেন, তৎকালীন চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক গৃহবধূ স্বপ্নাদেশ পেয়ে বাড়ির নিকটে অবস্থিত একটি পুকুরে জগদ্ধাত্রী দেবীর দর্শন পান। সেখানেই মণ্ডপ তৈরি করা হয় হোগলা পাতা দিয়ে। শুরু হয় জগদ্ধাত্রী দেবীর (Maa Jagadhatri) আরাধনা। জগদ্ধাত্রী দেবীকে অন্য এক রূপে পুজো করতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। নরসিংহ বাহনে অধিষ্ঠ এখানকার দেবী।
আরোও পড়ুন : বাড়ি-গাড়ির সাথে মিলবে প্রচুর টাকা! প্রেসিডেন্ট হয়ে মোদীর থেকে কত বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন ট্রাম্প?
তখন থেকেই গ্রামের মানুষজন জগদ্ধাত্রী দেবীকে পুজো করতে শুরু করেন ধাত্রীদেবী রুপে। গ্রামবাসীরা জানান, ধাত্রীদেবী খুবই জাগ্রত। ৩০০ বছরের পুরনো রীতি মেনেই এখানে পূজিত হন দেবী। নবমীর দিন দেবীকে অর্পণ করা হয় নানারকম মাছের পদ। তারপর সেই ভোগ বিতরণ করা হয় ভক্তদের মধ্যে। বাসমতি চালের খিচুড়ি, ১৩ রকমের ভাজা, তরকারি, পায়েস ও বিভিন্ন মাছের পদ দেবীকে ভোগ হিসাবে অর্পণ করা হয়।
পুজোর কয়েকটা দিন গ্রামবাসীরা মেতে ওঠেন উৎসবে। গ্রামবাসীদের মধ্যে ধাত্রীদেবীকে নিয়ে রয়েছে তুমুল উন্মাদনা। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন অংশগ্রহণ করেন এই পুজোয়। নরনারায়ণ সেবার উদ্দেশ্যে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হয় চাল। এমনকি এই মন্দির সংলগ্ন যে পুকুর রয়েছে সেখানে স্নান করে অনেকে মনস্কামনাও জানিয়ে আসেন।