‘ছোটলোক’দের সাথে মুখ লাগাই না! কল্যাণ ‘জেল খাটা’ বলতেই পাল্টা দিলেন মদন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সামনেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। এই মুহূর্তে দলের অন্দরে ব্যস্ততা তুঙ্গে। বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে নির্বাচনের আগে খুব তাড়াতাড়ি তৃণমূলে রদবদল হতে চলেছে। এই মুহূর্তে তারই নীল নকশা তৈরি করতে ব্যস্ত দল। একদিকে এই রদবদল নিয়ে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যস্ততা তুঙ্গে, ঠিক তখনই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠছে।

কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়কে ‘ছোটলোক’ বললেন মদন মিত্র (Madan Mitra)

আর কোনো আড়াল-আবডাল নয় একেবারে সামনে থেকেই একে অপরকে বেলাগাম আক্রমণ শানাচ্ছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। রাগের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে একে অপরের বিরোধিতা করে একেবারে খুল্লাম খুল্লা আক্রমণ শানাচ্ছেন একই দলের নেতারা। সম্প্রতি তেমনই কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের (Madan Mitra) নাম না করেই তাঁকে ‘খোঁচা’ দিয়ে  শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,’সারদা, নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত, জেল খাটা, ভোটে গোহারা নেতাদের সঙ্গে আমি মুখ লাগাতে চাই না।’

তারই পাল্টা জবাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি ‘ছোটলোক’ বলে মন্তব্য করলেন মদন মিত্র (Madan Mitra)। সম্প্রতি দ্য ওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মদন মিত্র (Madan Mitra) বলেছেন, ‘বাবা মা শিখিয়েছিলেন, বড়লোকের সঙ্গে ঝগড়া করবে না, আর ছোটলোকের সঙ্গে মুখ লাগাবে না। আমি কল্যাণের সঙ্গে মুখ লাগাতে চাই না। কুকুরের কাজ কুকুর করেছে, কামড়ে দিয়েছে পায়ে। তা বলে কি আমিও ঘেউঘেউ করে কামড়াতে যাব? কিছু উত্তর না দেওয়াটাই উপযুক্ত জবাব হবে।’

মুখে কিছু বলব না বললেও কিন্তু মদন (Madan Mitra) এদিন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আরও অনেক কথাই বললেন। একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে কামারহাটি বিধায়ক এদিন আরও বলেছেন, ‘কল্যাণ একবার আসানসোলে প্রার্থী হয়েছিল। এত খারাপ ব্যবহার করেছিল যে দ্বিতীয়বার আর সেখানে যায়নি। শ্রীরামপুর একটা জেতা সিট। ভোটে হারা কল্যাণকে জেতা সিটে প্রার্থী করা হয়েছিল। মমতার হাত ওঁর মাথায় না থাকলে কোর্টের মুহুরির কাজ করতে হত।’

আরও পড়ুন: সিলেবাস থেকে বাদ একাধিক বিষয়! উচ্চ মাধ্যমিকের চাপ কমাতে বড়সড় পদক্ষেপ নিল শিক্ষা সংসদ

কল্যাণ এদিন নাম না করেই মদন মিত্রকে খোঁচা দিয়ে’জেল খাটে নেতা’ বলেছিলেন তারই জবাবে পাল্টায় দিন মদন মিত্র এদিন বলেছেন, ‘দলের জার্সি পরে  জেলে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকাকে উজ্জীবিত করেছি। কারণ, আমাকে জেলে রেখেও আমার বিরুদ্ধে কোনও চার্জ ফ্রেম করতে পারেনি। দুর্নীতি তো দূরের কথা। খালি চার্জ ছিল, ‘হি ইজ ভেরি প্রভাবশালী’। এখানেই শেষ নয় সেইসাথে এদিন মদন মিত্র বলেছেন, ‘আমি শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী এই অপরাধে আমাকে থাকতে হয়েছিল। প্রতিদিন কুড়ি হাজার তিরিশ হাজার করে লোক জেলের বাইরে যেত। জেল থেকে বেরিয়েই আমি ভোটে লড়েছি। বিপুল ব্যবধানে জিতেছি।’

Madan Mitra

তবে তাঁরা দুজনেই একই দলের সদস্য। তাই এদিন মদন মিত্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তারা দুজন একই দলের সদস্য তাই নিজেদের মধ্যে কথা বলে কেন এই সমস্যা মিটিয়ে নিচ্ছেন না? এপ্রসঙ্গে মদনের সাফ জবাব, ‘ওঁর সঙ্গে কথা হওয়ার কোনও কারণ নেই। কথা হওয়ার কোনও কারণ নেই। ও ব্রাহ্মণ আমি কায়স্থ। ও মমতার বাড়ির ডান দিকে থাকে, আমি বাঁ দিকে। এত সময় কার আছে? ওর সঙ্গে কথা বলে সময় নষ্ট না করে মানুষের কাজ করা ভাল।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর