বাংলাহান্ট ডেস্ক : সোমবার বিধানসভায় বিধায়কদের হাতাহাতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে এই প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তাঁর দাবি ওই হাতাহাতি এবং গোলমালে আহত হননি একজনও বিজেপি বিধায়ক। উলটে তাঁরা এসএসকেএমে গিয়ে ভুয়ো সার্টিফিকেট চেয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে কার্যতই আবারও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এদিন বিধানসভার ঝামেলা প্রসঙ্গে মদন মিত্র বলেন, ‘বিজেপির বিধায়করা যা করেছেন, তাতে ওঁদের পুতিনের হাত থেকে সংবর্ধনা পাওয়া উচিৎ। বিধানসভায় সোমবার যা হয়েছে তা নিয়ে রাজ্যের কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। রাজ্যবাসী রামপুরহাট, ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে সমব্যথী।’ তৃণমূলের কালারফুল বয় আরও জানিয়েছেন, ‘বিজেপির বিধায়কদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওঁরা কেউই আহত হননি। পিজিতে গিয়েছিলেন ১৫ জন। জাল সার্টিফিকেট করে দিতে অনুরোধ করেছিলেন। ডাক্তাররা টিটেনাস বা ভিটামিন দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। অথচ আমাদের দু’জন হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে শুয়ে আছেন। তবে এটা বিজেপি ঠিক করেনি।’ এদিন ‘এক মাঘে শীত যায় না’ বলে স্পষ্টতই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
এই গোলমাল প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, তাদের একাধিক বিধায়ক আহত হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে এই হাতাহাতিতে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন বিজেপির পারিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা। তাদের দাবি, পাঁজরে আঘাত লেগেছে তাঁর। যদিও এর পালটা দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন একটি এক্সরে প্লেটের ছবি ট্যুইট করে দাবি করেন সেটিই নাকি মনোজ টিগ্গার এবং সেটিতে কোনও রকম ফ্র্যাকচার নেই। এর প্রেক্ষিতে অবশ্য গেরুয়া শিবিরের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, সোমবার বিধানসভায় হাতাহাতি, গালাগালি থেকে রক্তারক্তি বাদ যায়নি কিছুই। সোমবার সকাল থেকেই তোলপাড় ছিল বিধানসভা। বগটুই গণহত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা। স্পিকার তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করলে রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁকেও। স্পিকারকে ঘিরে তৈরি করা হয় একটি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের একটি বেষ্টনী। বিজেপির মহিলা বিধায়করা ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই বেষ্টনি ভাঙার চেষ্টাও করেন। এরপরই জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়করা। তারপরই তৃণমূল বিধায়ককের সঙ্গে হাতাহাতি বাঁধে বিজেপি বিধায়কদের। হাতাহাতি, কিল, চড়, ঘুঁষি থেকে গালিগালাজ চলে সবই।
সেই ধস্তাধস্তিতে জামা ছিঁড়ে যায় বিজেপির পারিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গার। মাটিতে পড়ে যান অপর আর এক বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতো। চশমা ভেঙে যায় এক বিধায়কের। নাক ফেটে রক্তারক্তি বাঁধে চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের। তাঁর সরাসরি অভিযোগ, বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন তাঁর। ঘটনার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী সহ আরও ৪ জন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয় বিধানসভায়।