বিলিতি বর্জন করে দেশি খাওয়ায় জোর দিলেন মদের দোকানে ভিড় দেখে ব্যথিত মদন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ করোনা আবহে পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার। গত কয়েকদিন ধরেই লাগামছাড়া হয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। প্রায় দিনই আক্রান্ত হচ্ছেন কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রথমে সম্পূর্ণ লকডাউনের পক্ষপাতী না হলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে পরিস্থিতি দেখে শেষ পর্যন্ত লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। আর লকডাউনের সিদ্ধান্ত শুনেই সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন যারা, তারা হলেন আপামর সুরাপ্রেমী। গত বছরের তুলনায় এই দৃশ্যটি যে একেবারেই বদলায়নি তা আরেকবার বুঝিয়ে দিল বাংলার সুরাপ্রেমিরা। লকডাউনের খবর প্রকাশিত হতেই ফের একবার মদের দোকানের সামনে দেখা গেল লম্বা লাইন। এই দৃশ্য বারবার উঠে এসেছে নানা সংবাদমাধ্যমে, তেমনি চোখ এড়ায়নি কামারহাটির বর্তমান বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রেরও। কেউ কেউ বলেন ভোটে জিতে ফের একবার মন্ত্রী হওয়ার আশা ছিল। সেই আশা সম্পূর্ণ না হওয়ায় একটু অভিমান তো রয়েছেই। তবে সেসবকে পাত্তা না দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরোদমে আগের মতই ফর্মে মদন মিত্র।

এদিন সুরাপ্রেমীদের এই লাইনকেও নিজের ফেসবুক লাইভে বিষয় হিসেবে তুলে আনলেন তিনি। সরাসরি মদ বা সুরা শব্দ উচ্চারণ না করলেও দিশী-বিদেশী শব্দের খেলায় এদিন আসল কথা ঠিকই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।মদন মিত্রের কথায় একদিকে যখন ব্ল্যাক হচ্ছে প্রাণদায়ী ওষুধ রেমডেসিভির, প্রাণদায়ী অক্সিজেন তখনই অন্যদিকে লম্বা লাইন পরছে মদের দোকানের সামনে। তিনি বলেন, “মানুষের খুব পছন্দের জিনিস।  রাস্তা দিয়ে আসতে আসতে দেখলাম ব্ল্যাক হচ্ছে। আমরা ব্রিটিশের সময় বিদেশি বর্জন করেছিলাম। এখন অনেকে বিদেশি বর্জন করে দিশি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একশো টাকার দিশি এক দেড় হাজার টাকায় ব্ল্যাক হচ্ছে। লাভলি। একদিকে লাইন পড়েছে দোকানে। আর মানুষ লাইন দিচ্ছেন সেফ হোমে।”

সুরাপ্রেমীদের এই লাইন যে তিনি মেনে নিতে পারছেন না সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি মদন মিত্র। কামারহাটির বিধায়ক স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, “আমার নিজেকে দেখে সন্দেহ হয় যে, আমি কোন দলে পড়ি। এটা ঠিক যে আমি মেনে নিতে পারছি না। যে লাইন দেখে এলাম, সত্যি ভাবছি মানুষ আর কুকুরের মধ্যে তফাৎটা কী?” হাসির ছলে কথাগুলি বললেও তার মধ্যে অন্তর্নিহিত ব্যাঙ্গের আঘাতটিও ছিল বেশ জোরালো। তবে একই সঙ্গে এ দিন ফের একবার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ মদন। তিনি জানান, যেভাবে বেশ কিছু নার্সিংহোম দেড় লক্ষ টাকা অবধি বিল তৈরি করছে একেক দিনের জন্য তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যসাথী যদি ঠিক সময়ে না দিতেন কি যে হতো তা ভাবতেও পারছিনা। এদিন নাম না করে নার্সিংহোম গুলোকেও যথেষ্ট কটাক্ষ করেন তিনি। নিজেই জানান, অনেকক্ষেত্রেই খবর আসছে রোগীর পরিজনের সামনে তাকে রাখা হচ্ছে ভেন্টিলেটরে। কিন্তু আত্মীয়-স্বজন চলে গেলেই তাকে জেনারেল বেডে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়ার পরেও আত্মীয়স্বজনদের জানানো হচ্ছে রোগী ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। সেই কারণেই তিনি বলেন, বিজেপি যদি সরকারে এসে স্বাস্থ্যসাথী বন্ধ করে দিত। তাহলে কি হতো ভাবতেও পারছিনা। একইসঙ্গে এদিন বেশকিছু অক্সিজেন পার্লার এবং সেফ হোম তৈরি করার কথাও জানান তিনি।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর