বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চিকিৎসা বিজ্ঞান যে দিন দিন একধাপ করে আরও উন্নতির লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এবার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা যুগের সাথে তাল মেলাতে এবার হাজির রোবর্ট নার্স (Robot Nurse)। কী অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এও কী সম্ভব! তবে শুনুন। জ্বর মাপতে পারবে। রোগীকে ওষুধ খাওয়াতে পারবে। পাশাপাশি গলা থেকে সোয়াবের মতো নমুনাও সংগ্রহ করতে পারবে। আর সব থেকে তাজ্জব বিষয় চাইলে রোগীর প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারবে এমনই এক যন্ত্র সেবিকা বা রোবট নার্সের পরিষেবা এবার মিলবে বাংলায়। শুভ যাত্রা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার।
জানা যাচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) একটি বেসরকারি হাসপাতালে (Private Hospital) সূচনা হতে চলেছে এই রোবট নার্সের। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ (Rathin Ghosh) বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ এই পরিষেবার উদ্বোধন করবেন। সূত্রের খবর, একটি বেসরকারি কলেজের পড়ুয়ারা প্রায় দেড় বছরের চেষ্টায় এই রোবটটিকে সফল রূপ দিয়েছেন। প্রজেক্টটির নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী ডঃ অঙ্কুশ ঘোষ। পূর্ব ভারতের কোনো হাসপাতালে এহেন রোবর্ট নার্সের ব্যবহার এই প্রথম বলেই দাবি হাসপাতাল তরফে।
এই যন্ত্র সেবিকা প্রসঙ্গে বিজ্ঞানী ডঃ অঙ্কুশ ঘোষ জানান, প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয়ে রোবর্টটি তৈরী হয়েছে। সাধারণ মানব নার্সের মতো প্রায় সব কিছুই করতে পারবে এই রোবর্ট। রোগীকে ওষুধ দিতে পারবে। খাওয়াতে পারবে, জ্বর মাপতে পারবে, নমুনাও সংগ্রহ করতে পারবে। এখানেই শেষ নয়, ৫ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন এই যন্ত্র নার্স কৃত্রিম বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে রোগীর নানা প্রশ্নের জবাবও দিতে পারবে। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলে রোবট নার্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রোগীর সাথে যোগাযোগও করতে পারবে বলে জানিয়েছেন তিঁনি।
তিঁনি আরও জানান কোভিড মহামারী কালে, আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি যাওয়া বিপজ্জনক ছিল। তবুও তাঁদের সেবা প্রদান করতে চিকিৎসক, নার্সরা নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রোগীর সংস্পর্শে গেছেন। সেই সময় এই যান্ত্রিক নার্সের বন্দোবস্ত থাকলে তাঁদের ঝুঁকি অনেকটাই কমত। সেই মহামারীর কথা মাথায় রেখেই রোবট নার্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, আপাতত মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোবট নার্সের ট্রায়াল রান চলবে। এই ট্রায়াল রান সফল হলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে এক আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেন কলকাতার বড় কোনো হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে এই ট্রায়াল শুরু করা হল না! এই প্রশ্নের উত্তরে অঙ্কুশ জানান, সেসব জায়গায় এই নার্সের ট্রায়াল রান শুরু হলে চাকরি খোয়ানোর আশঙ্কায় ভুগবেন কর্মীরা। তাই সেকথা মাথায় রেখে আপাতত এই বেসরকারি হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছে।