বাংলা হান্ট ডেস্ক: ক্লাসে বরাবরই মেধাবী ছাত্রী হিসেবেই শিক্ষকমহলের কাছে পরিচিত ছিল আসানসোলের অনন্যা দাশগুপ্ত। এমনকি, স্কুলের সহপাঠীরাও অনন্যাকে এককথায় ‘পড়ুয়া’ বলেই জানত। এহেন অনন্যা যে সুসংবাদ আনবে, তা বোধহয় সকলেরই কম বেশি জানা ছিল।ফলে, শুক্রবার সকাল থেকেই দাশগুপ্ত পরিবার ‘ভালো খবর’ -এর প্রতীক্ষায় ছিল। ৯টায় সংবাদ মাধ্যমে যখন জানতে পারেন মেয়ে মাধ্যমিকে তৃতীয় হয়েছে অনন্যার পরিবারের খুশির বাঁধ ভাঙে। দাশগুপ্ত পরিবার মেয়ের ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা করেছিল, কিন্তু তৃতীয় হবে, তা ভাবতেও পারেনি তাঁরা। অনন্যার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। আসানসোল উমারানি গড়াই মহিলা কল্যাণ গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী।
সূত্রের খবর, পরীক্ষার ফল বেরনোর পরই উচ্ছ্বসিত অনন্যার বাড়ির সদস্যরা। পরীক্ষার ফল প্রসঙ্গে অনন্যা বলে, “খুব ভাল লাগছে। এ রকম ভাবে পরের পরীক্ষাগুলিতেও যেন ভাল রেজাল্ট করতে পারি।” একই সঙ্গে সে জানিয়েছে, করোনার কারণে যে ভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেই পরিস্থিতি যেন না আসে।
অনন্যার মায়ের কথায়, প্রত্যেকটি বিষয়ে তার শিক্ষক ছিল। শুধু অংক করাতেন ‘শিক্ষক’ বাবা। তাঁর বাবা শুভ্র দাশগুপ্ত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। মেয়ের যাতে পড়াশোনায় সামান্যতম খামতি না থাকে সেই দিকে নজর রাখতেন তিনি নিজেই। অনন্যার বাবা অবশ্য বলছেন, “অনন্যা পড়ার পাশাপাশি অনেক বেশি লিখত।” বাবার কাছে মূলত অঙ্কটাই দেখত অনন্যা। বাকি বিষয়গুলিতে সাহায্য করেছেন তার মা। এ ছাড়াও স্কুলের মকটেস্টগুলিও মেয়ের সাফল্যের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন অনন্যার বাবা। অনন্যার জেঠু জানিয়েছেন, তবে শুধু পড়ার বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকত না এই ছাত্রী। গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসে সে, জানিয়েছে তার জেঠু। অনন্যা অবশ্য অকপটে বলে, খাওয়া এবং স্নান বাদে দিনের বেশির ভাগ সময়েই পড়াশোনা করত সে।
বলা বাহুল্য, মাধ্যমিক মানেই জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষা। টানা এক বছরের পরিশ্রম। অবশেষে এই দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সাফল্যের মুখ দেখেছে অনন্যা। আর স্কুল টপারের এই অবিশ্বাস্য সাফল্যে ভীষণ ভাবেই উচ্ছ্বসিত স্কুলের শিক্ষিকারাও।