বাংলাহান্ট ডেস্ক : সবার কাছে জীবনের সংজ্ঞাটা এক নয়। জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত যে কতটা কঠিন তা সবাই টের পায় না। ঠিক যেমন সুন্দরবন (Sundarban) অঞ্চলের সুমনা। আর পাঁচটা মেয়ের মতো সাধারণ নয় তার জীবন। দারিদ্রতা সুমনার সংসারের নিত্য সঙ্গী। তবে তার মধ্যেও মাধ্যমিকে (Madhyamik Pariksha) সে পেয়েছে ৯২.৪ % নম্বর।
সুন্দরবনের মথুরাপুর অঞ্চলের বাসিন্দা সুমনা হালদার কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের ছাত্রী। সুমনা স্কুলের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সুমনার পরিবারের বাস কৃষ্ণচন্দ্রপুরের শীতলা রোডে একটা ছোট্ট ঘরে। সুমনার বাবা সুভাষ হালদার বাতাসা বিক্রি করেন। মা ঘরের কাজকর্ম সামলান। সুমনা তিন ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান।
আরোও পড়ুন : বুম্বাদা বলছেন, ‘পড়াশোনাটা আমার…’ মাধ্যমিকে কত নম্বর পেয়েছিলেন প্রসেনজিৎ? দেখুন মার্কশিট
দিদির বিয়ে হয়ে গেছে ও ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। প্রবল অর্থকষ্ট হালদার পরিবারের নিত্য সঙ্গী। তবে আর্থিক প্রতিকূলতা সুমনাকে দমাতে পারেনি। প্রতিকূলতার মধ্যেই সে লড়াই চালিয়ে গেছে মাধ্যমিকের (Madhyamik Pariksha) জন্য। সুমনা বলছে, পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো ছিল। পরীক্ষাও ভালো হয়েছিল। আশা ছিল ৬৬০ থেকে ৬৭০ নম্বর আসবে।
আরোও পড়ুন : মাধ্যমিক পাশেই এবার হয়ে যাবে গ্রুপ ডি’র চাকরি! সুবর্ণ সুযোগ রেলে, এই তারিখেই শেষ আবেদন
সেখানে এসেছে ৬৪৭। কিছুটা তাই মন খারাপ। তবে সুমনা এখন আক্ষেপ ভুলে ভবিষ্যতে মন দিতে চায়। বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায় সে। পড়াশোনার পাশাপাশি সুমানার আর কী পছন্দ? এই বিষয়ে সে জানিয়েছে, “অবসরে আমি আঁকতে ভালবাসি। শিখতেও যেতাম। পরীক্ষার আগে যদিও সে সব বন্ধ রেখেছিলাম।”
দারিদ্রতার মধ্যেও সুমনার বাবা সর্বদা পাশে ছিলেন মেয়ের। সুমনাকে সাহায্য করেছে তার গৃহ শিক্ষকরাও। কেউ স্বল্প বেতনে, আবার কেউ বিনামূল্যে সুমনাকে পড়িয়েছে। এই আনন্দের মধ্যেও সুমনার মা কিন্তু বেশ চিন্তিত। সুমনার মায়ের কথায়, “আমাদের আর্থিক অবস্থা তো তেমন ভাল নয়। নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে সুমনার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কী করে পূরণ করব, এখন সেটাই শুধু চিন্তা।”