বাংলা হান্ট ডেস্ক: সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা, কিন্তু তারপরেও স্বামীর পড়ালেখায় কোন বাধা আসতে দেননি। দিনমজুরি, পরিচারিকার কাজ করে যুগিয়েছিলেন স্বামীর পড়াশোনার খরচ। স্বামী যাতে ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন, তার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্যের সোপানে দারিদ্র্য যাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে তার পূর্ণ খেয়াল রেখেছিলেন স্ত্রী। আর এবার তার পুরস্কারও পেলেন।
স্বার্থত্যাগের এমন পুরস্কার এই স্ত্রী পেয়েছেন যা কেউ কখনও কল্পনাও করতে পারবেনা হয়ত। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নামের আগে ট্যাক্স অফিসারের লেভেল লাগতেই স্ত্রীকে ছেড়ে গেলেন স্বামী। সহধর্মিনী করে নিয়ে এলেন অন্য নারীকে। সম্প্রতি এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী থাকলো মধ্যপ্রদেশ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের ওই ট্যাক্স অফিসারের নাম কামরু হাথিলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাঙ্কিং পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি যাতে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারেন তাই সংসারের দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন স্ত্রী মমতা। একদিকে স্ত্রীর সাপোর্ট, অন্যদিকে নিজের চেষ্টা, পরীক্ষায় সফল হতে খুব বেশি সময় লাগেনি কামরুর। তবে তিনি সফল হতেই হেরে গেলেন লড়াকু স্ত্রী মমতা।
জানা গেছে আজ থেকে বছর আটেক আগে সাল ২০১৫ তে আলাপ হয় মমতা আর কামরুর। সেই বছরই তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই সময় কামরুর কাছে স্নাতক ডিগ্রি থাকলেও কামরু ছিলেন বেকার। তবে হার মানেননি মমতা। সমস্ত প্রতিকূলতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সংসারের দায় দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেন।
স্বামীকে পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দেন এবং পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য পরিচারিকার কাজ নেন। এর পাশাপাশি আরো নানা ধরণের কাজ করেছেন মমতা। স্বপ্ন ছিল স্বামীকে বড় অফিসার হিসেবে দেখা। মমতার সেই স্বপ্ন পূরণ-ও হয় বটে। ২০১৯ সালে কর্মাশিয়াল ট্যাক্স অফিসারের পদে নিয়োগ হন কামরু৷
তারপরেই রতলম নামে অপর এক তরুণীর সঙ্গে তার আলাপ হয়৷ মেলামেশা বাড়তেই একসাথে থাকতেও শুরু করেন তারা। এদিকে মমতা এইসবের বিন্দুবিসর্গও জানতেননা। ঘটনা তার কানে পৌঁছানোর পর স্বামীর নামে প্রতারণার অভিযোগ আনেন তিনি। সেই সময় কামরু জানান, তিনি আর মমতার সঙ্গে থাকতে চাননা। বদলে প্রতি মাসে মমতাকে ১২ হাজার টাকার করে ভাতা দেবেন৷ সম্প্রতি মমতার আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, এই ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও কামরু আর রাখছেন না৷ বিষয়টি আপাতত আদালতে বিচারাধীন।