বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রায়শই বিজ্ঞানীরা (Scientists) এমন কিছু তথ্য আমাদের সামনে উপস্থাপিত করেন যেগুলি জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যান সবাই। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার একটি চমকপ্রদ বিষয়ে সামনে এসেছে। মূলত, বিজ্ঞানীরা এবার বঙ্গোপসাগরে (Bay Of Bengal) ৫০,০০০ বছরের পুরোনো পলিতে সমাহিত অর্গানিজমের দ্বারা ফেলে আসা বিশাল ম্যাগনেটিক ক্রিস্টালের সন্ধান পেয়েছেন। যেগুলি এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত সবথেকে নবীন দৈত্যাকার ম্যাগনেটোফসিলস (Magentofossils) হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, ম্যাগনেটোট্যাকটিক ব্যাকটেরিয়া কয়েক ন্যানোমিটার আকারের ক্রিস্টাল তৈরি করে। যেগুলি ম্যাগনেটাইট বা গ্রেগাইট দিয়ে গঠিত। এগুলি জলের মধ্যে বা স্যাচুরেটেড পলিতে পরিবর্তনশীল রাসায়নিক অবস্থাকে প্রত্যক্ষ করে। পাশাপাশি, ম্যাগনেটোফসিল নামে পরিচিত এই ক্রিস্টালগুলি ওই অর্গানিজমের মৃত্যু হলেও অবশিষ্ট থাকে।
পাশাপাশি, এই জীবাশ্মগুলি পলির চৌম্বক সংকেতেও (Magnetic Signal) যথেষ্ট অবদান রাখে। যা অতীতের পরিবেশের পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। এমতাবস্থায়, CSIR ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশানোগ্রাফি গোয়ার নেতৃত্বে থাকা বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ৩ মিটার দীর্ঘ একটি সেডিমেন্ট করতে নিষ্কাশন করেছেন। যেটি পলি বহনকারী গোদাবরী, কৃষ্ণা এবং পেনার নদী দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে।
আরও পড়ুন: চলছে প্রস্তুতি, জাপানের কাছ থেকে এতগুলি বুলেট ট্রেন কিনবে ভারত! এই মাসেই হতে পারে চুক্তি
প্রধানত পলিমাটি দ্বারা গঠিত এই কোরটি বেন্থিক (জলের নিচের অংশে ঘটে) এবং প্ল্যাঙ্কটিক (জলে ভাসমান বা প্রবাহিত) ফোরামিনিফেরা-খোলস সহ এককোষী জীবের উভয়কেই প্রকাশ করে। এদিকে, কোর সেকশনের নমুনাগুলিতে চৌম্বকীয় বিশ্লেষণ এবং ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি ব্যবহার করে, দলটি সূচ, বুলেট এবং বর্শা আকৃতির মতো বড় ম্যাগনেটোফসিলকে শনাক্ত করেছে। পাশাপাশি, গত ৪২,৭০০ বছর ধরে বিস্তৃত ওই সেডিমেন্ট কোর জুড়ে ম্যাগনেটোফসিলগুলি উপস্থিত রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রথম! রোগীর শরীরে সফল ভাবে প্রতিস্থাপিত হল অন্যের দু’টি হাত, নতুন জীবন পেলেন চিত্রকর
এমতাবস্থায়, গবেষকরা জানিয়েছেন, যখন নদী দ্বারা বাহিত প্রতিক্রিয়াশীল লোহা এবং জৈব কার্বন অক্সিজেন-কমযুক্ত বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করে, তখন জৈব উপলব্ধ লোহা খাদ্যের উৎস হিসেবে অর্গানিক কার্বনের সাথে মিলিত হয়ে বৃহৎ ম্যাগনেটোফসিল উৎপাদনকারী অর্গানিজমের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, আরও জানা গিয়েছে যে, যতদিন এই পরিবেশগত অবস্থা অব্যাহত থাকবে, ততদিন ওই অর্গানিজমগুলি ম্যাগনেটোফসিল তৈরি করতে থাকবে।