৭০ কিলোমিটার দূরে বেচতে গিয়েছিলেন ৫১২ কেজি পেঁয়াজ, বদলে ২ টাকার চেক পেলেন কৃষক

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে পেঁয়াজের সঙ্কট (Onion Crisis)। যা আরও শোচনীয় রূপ নিচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে বিশ্বে একটি খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। এর জেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন ভারতীয় এক কৃষকও (Onion Farmer)। শীতের মরসুমে ৫১২ কিলো পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা বিক্রি করতে গিয়ে যা জুটলো, তা এক কথায় হৃদয়বিদারক।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কৃষক মান্ডিতে ফসল বেচতে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) সোলাপুরের কৃষক রাজেন্দ্র তুকারাম চৌহান। গোটা শীতের মরসুমে ৫১২ কেজি পেঁয়াজ চাষ করেছেন তিনি। কিন্তু তার বদলে যা পেলেন তাতে তিনি একেবারেই অবাক। শুধু তিনি নয়, ৫১২ কেজি পেঁয়াজের বিনিময়ে যত মূল্য এই কৃষক পেয়েছেন, তাতে অবাক হয়েছে গোটা দেশ।

Onion Farmer India

সোলাপুরের কৃষক মান্ডিতে পেঁয়াজ বিক্রি করে তুকারামের মোট লাভ হয়েছে মাত্র ২ টাকা! বাজারে কেজিপ্রতি মাত্র ১ টাকায় নিজের ফসল বেচতে পেরেছেন এই কৃষক। অভিযোগ, ওই ক্রেতা তাঁর ফসলকে নিম্নমানের মন্তব্য করে এত কমে সেটি কিনেছেন। সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে তুকারামের হাতে পড়েছিল ২.৪৯ টাকা। অর্থাৎ ৫১২ কেজি পেঁয়াজ মাত্র ২ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। 

উল্লেখ্য, এই কৃষকের বাড়ি সোলাপুরের বারশি গ্রামে। প্রায় ৭০ কিলোমিটার সফর করে কৃষক মান্ডিতে পৌঁছেছিলেন তিনি। তুকারামের পাওয়া চেক ও রসিদের ছবি টুইট করেছেন রবীন্দ্র কুমার আদি নামক এক নেটিজেন। তুকারামের মাধ্যমে কৃষকদের দুর্ভাগ্যের চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি। রসিদে দেখা যাচ্ছে, সূর্য ট্রেডিং নামক এক ব্যবসায়ীকে ৫১২ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলেন রাজেন্দ্র তুকারাম চৌহান।

https://twitter.com/iamrkadi/status/1628986133211389952

সেখানে কেজিপ্রতি ১ টাকা দেওয়া হয় তাঁকে। রসিদটির তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। পরিবহন খরচ বাবদ ১৫ টাকা, ওজনের খরচ ২৪ টাকা এবং আরও খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের হাতে এসেছে মাত্র ২.৪৯ টাকা। এই মূল্যের একটি চেকের ছবিও পোস্ট করেছেন ওই নেটিজেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তুকারামের নামে ২ টাকার একটি চেক কাটা রয়েছে। রাজেন্দ্র তুকারাম চৌহানের দাবি, তাঁর ফসল উচ্চমানেরই ছিল। 

কিন্তু ওই ব্যবসায়ী সেটিকে নিম্নমানের বলে দেন। তিনি বলেন, “আমি সোলাপুরের এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীর কাছে পাঁচ কুইন্টালের বেশি ওজনের ১০ বস্তা পেঁয়াজ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সব খরচ বাদ দেওয়ার পর আমি তাঁর কাছ থেকে মাত্র ২.৪৯ টাকা পেয়েছি।” তিনি আরও জানিয়েছেন, বিগত ৩-৪ বছরে বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম অনেকটাই বেড়েছে। ৫১২ কেজি পেঁয়াজ ফলাতে তিনি প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। গত বছরও কেজিপ্রতি ২০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলেন তিনি। কিন্তু এ বছর অনেক টাকাই লোকসান করলেন তিনি। 

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর