বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে দেশে পেট্রোল-ডিজেলের আকাশছোঁয়া দাম কিংবা রান্নার গ্যাস বাবদ মধ্যবিত্তদের হেঁসেলে আগুন সহ একাধিক ইস্যুকে ছাপিয়ে গেছে রাহুল গান্ধীর নেপাল যাত্রা। নেপালের কাঠমান্ডুতে এক নাইট ক্লাবে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার একটি ভিডিও ভাইরাল হতে থাকে এবং বিজেপি আইটি সেল সেটিকে ‘নাইট ক্লাবে ফূর্তি’ বলে দাবি করতে থাকে।
পরবর্তীতে, গোটা দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং একদিকে যেমন রাহুল গান্ধীর সমালোচনায় বিজেপি আইটি সেল থেকে শুরু করে সকল নেতা-নেত্রীরা আসরে নামেন, ঠিক তেমনিভাবে রাহুলের সমর্থনে কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দলকেও নামতে দেখা যায়। বর্তমানে রাহুলের নেপাল যাত্রা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে দেখা গেল তৃণমূল সাংসদ নেত্রী মহুয়া মৈত্র এবং ওপার বাংলার লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে।
অতীতকালে, একের পর এক ইস্যুকে সামনে এনে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। এদিন তিনি রাহুল গান্ধীর সমর্থনে নেমে বলেন, “রাহুল গান্ধী হোক কিংবা অন্য কোন ব্যক্তি, সে তার ব্যক্তিগত সময়ে কোন নাইট ক্লাবে যাক কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে যাক না কেন, সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এক্ষেত্রে কারও হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।” এছাড়াও তিনি কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, “কোন মানুষকে ট্রোল করার বিষয়টি হলো বিজেপির একমাত্র কাজ এবং তারা সেটাই সবচেয়ে ভালো করতে পারে।” এছাড়াও তিনি বিজেপি সরকারের এই কর্মকাণ্ডকে ‘চায়ের কাপে বিয়ার খাওয়ার’ সঙ্গেও তুলনা করেন।
পরবর্তীকালে বাংলাদেশের বিখ্যাত লেখিকা-সমাজকর্মী তসলিমা নাসরিনও কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখর হন। তিনি টুইট করে বলেন, “কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাইট ক্লাবে যাওয়াকে কোনো রকম ভুল হিসেবে আমি দেখিনা। এটি অন্তত সংসদে বসে পর্নোগ্রাফি দেখার থেকে অনেক ভালো কাজ।”
Nothing is wrong if a politician goes to a nightclub. It is much better than watching pornography in the parliament.
— taslima nasreen (@taslimanasreen) May 3, 2022
মঙ্গলবার সকাল হতেই রাহুল গান্ধীকে নিয়ে একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে বিজেপি দল। তবে এর মাঝেই বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগতেও দেখা যায় একাধিক কংগ্রেস নেতাকে। কংগ্রেস দলের নেতা রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেন, “আমাদের দেশে আপাতত কোনো বিবাহ অনুষ্ঠানে শামিল হওয়া অপরাধের মধ্যে পড়ে না। তবে বিজেপি সরকার যেকোনো দিন এটিকে বেআইনি বলে দাবি করতে পারে!” এছাড়াও তিনি এদিন মোদির পাকিস্তান যাত্রাকে কটাক্ষ করে বলেন, “রাহুল গান্ধী বিনা আমন্ত্রণে নেপালে যাননি, কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সেটাই করেছিলেন পাকিস্তান গিয়ে।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বেলা গড়ানোর সাথে সাথেই আসল সত্যটি সামনে আসে। জানা যায়, নেপালের কাঠমান্ডুতে বান্ধবী সুমনিমা উদাসের বিয়ের পার্টিতে যোগদান করার উদ্দেশ্যেই গিয়েছিলেন রাহুল। সূত্রের খবর, সেই বিয়ের পার্টিটি ম্যারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই অনুষ্ঠান চলাকালীনই রাহুল গান্ধীর উক্ত ভিডিও ভাইরাল হয়ে ওঠে।
জানা গিয়েছে, রাহুল গান্ধীর এই বান্ধবী দিল্লিতে সাংবাদিকতার সূত্রে প্রায় 15 বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেই সময় সিএনএন-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং দিল্লি ধর্ষণ কাণ্ড ও 2014 সালের লোকসভা নির্বাচন কভার করার সময়েই তাঁর সাথে আলাপ হয় রাহুল গান্ধীর। এরপর থেকেই সেই আলাপ বন্ধুত্বের পর্যায়ে পৌঁছে যায়। বর্তমানে সাংবাদিকতা ছেড়ে দিলেও সেই বন্ধুত্বে এতটুকু ভাটা পড়েনি আর সেই কারণেই বান্ধবীর এক ডাকেই নেপাল গিয়ে হাজির হন রাহুল গান্ধী।