বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য নূপুর শর্মাকে বরখাস্ত করেছে বিজেপি, একই পরিণতি মহুয়া মৈত্রর? উঠছে প্রশ্ন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পয়গম্বর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন নূপুর শর্মা (Nupur Sharma)। তাঁকে সমর্থন জানিয়ে ট্যুইট করেন নবীন জিন্দল। ইসলাম বিরোধী বিতর্কিত কথা বলায় দু’জনকেই বরখাস্ত করে বিজেপি (BJP)। এবার একই প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC)। বলা ভালো প্রশ্নের তীর তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দিকেই। হিন্দু দেবীকে নিয়ে কটূক্তি করার শাস্তি হিসাবে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra) বহিষ্কার কি করবেন মমতা? নাকি ঢাল হয়ে বিরোধীদের সব তীর নিজের পিঠেই নেবেন?

‘হিন্দু দেবী কি ধূমপায়ী?’ প্রশ্ন নেটিজেনদের

সম্প্রতি একটি তথ্য চিত্রের পোস্টার ভাইরাল হয়। পোস্টারটি শেয়ার করেন লীনা মানিমেকালাই নামের এক তরুণী। সেখানে দেখা যায় হিন্দু দেবী মা কালীর পোষাকে একজন ধূমপান করছেন। হিন্দু ধর্মকে অপমান করা হয়েছে এই অভিযগে ওঠে বিতর্কের ঝড়। নেট নাগরিকদের একাংশের দাবি, ‘হিন্দু দেবদেবীর অপমান করা কি এতটাই সহজ!’ এই নিয়ে বাদবিতণ্ডা চলতেই থাকে। এরই মধ্যে আগুনে ঘি ঢালার কাজটি করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি বলে বসেন, ‘আমার কাছে কালী মানে যিনি মাংস ভক্ষণ এবং সুরা গ্রহণ করেন। নিজের ভগবানকে তুমি কীভাবে দেখতে চাও তা কল্পনা করার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে ভগবানকে হুইস্কি দেওয়া হয়, আবার কিছু কিছু জায়গায় তা ভগবানের অপমানের সমান।’

বিরোধিতা সুকান্তর

মহুয়ার এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) মঙ্গলবার একটি ট্যুইট করে তিনি লেখেন, ‘মা কালীকে সনাতন ধর্মে অ্যালকোহল এবং মাংস ভক্ষণকারীদেবী রূপে উপাসনা করা হয় না। মা কালী হিন্দুদের কাছে যুগ যুগ ধরে অশুভ শক্তির বিনাশকারী শক্তির প্রতীক রূপে পুজিত হয়ে আসছেন। মহুয়া মৈত্রের মা কালী সম্পর্কে এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারে দাবী জানাচ্ছি।’ এরপরই পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে সাফাই দেয় তৃণমূল। শাসক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘মহুয়া মৈত্র দেবী কালীকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এই মন্তব্যকে কোনও ভাবেই দল সমর্থন করে না। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরনের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে।’

উভয় সংকটে তৃণমূল

এরইমধ্যে গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নূপুর শর্মাকে কেন এখনও গ্রেফতার করা হয় নি সেই নিয়ে তুলোধুনো করেছেন বিজেপিকে। এবং পশ্চিমবঙ্গের একাধিক থানায় নূপুরের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। কলকাতা পুলিশ জারি করেছে লুক আউট নোটিশও। এখন বিজেপির দাবি, নূপুর শর্মাকে তারা বরখাস্ত করেছে। তাই মহুয়া মৈত্রকেও বরখাস্ত করতেই হবে তৃণমূলকে। এবং যত শীঘ্র সম্ভব গ্রেফতারও করতে হবে কৃষ্ণনগরের সাংসদকে। তৃণমূলের সামনে এখন দুটি রাস্তা।

১) তৃণমূল যদি মহুয়া মৈত্রকে বরখাস্ত না করে, তাহলে বিজেপি ‘তৃণমূল হিন্দুবিরোধী’ বলে প্রচার চালাবে। যার প্রভাব আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো রকমই পরতে পারে।
২) তৃণমূল যদি মহুয়া মৈত্রকে বরখাস্ত করে, তাহলে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে চিড় ধরতে পারে। এবং বিজেপির চাপের কাছে মাথা নত করা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) ‘ইগোতে’ লাগতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। সুতরাং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী সিদ্ধান্ত নেন তা সময়ই বলতে পারে।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর