ক্লাসরুমের মধ্যেই ছাত্রকে “বিয়ে”! ভিডিও ভাইরাল হতেই “আসল সত্যি” সামনে আনলেন অধ্যাপিকা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পরনে লাল টুকটুকে বেনারসি। মাথায় চোলি, গলায় মালা। এক্কেবারে নববধূর সাজে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক মহিলা। আর তার বিপরীতে যিনি আছেন, তিনি অবশ্য পুরোপুরি ফর্মাল পোশাক পড়েছেন। একটা সোয়েট শার্ট আর জিন্স, তবে গলায় জড়ানো আছে শাল! কিন্তু, তাতে কী! ফর্মাল ড্রেসেই সিঁথি রাঙিয়ে দিলেন বেনারসি পরিহিতার।

এই পর্যন্ত গল্পটা শুনে আপনাদের মজা লাগলেও মনে হতেই পারে, এ আর এমন কি বড় কথা! কিন্তু এই বিবাহের আসর যদি হয় কোন ক্লাসরুম, তাহলে রীতিমতো চমকে যাওয়ার মত অবস্থা হয় বৈকি! এবার নিশ্চয়ই ভাবছেন, ক্লাসরুমে আবার বিবাহের আসর কিভাবে সম্ভব? অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমনই এক ঘটনা ঘটে গিয়েছে নদিয়ার (Nadia) ম্যাকাউটের (MAKAUT) হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের ক্লাসরুমে।

ম্যাকাউটের (MAKAUT) হরিণঘাটা ক্যাম্পাসে ভাইরাল বিয়ে

শুধু তাই নয়, এই বিবাহে পাত্রী হচ্ছে বিভাগীয় প্রধান পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়। আর যিনি বিভাগীয় প্রধানের গলায় মালা দিলেন তিনি হলেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই (MAKAUT) প্রথম বর্ষের ছাত্র। তবে বলা বাহুল্য ইতিমধ্যে এই ঘটনাটির ক্লিপিং উল্কার গতিতে ভাইরাল (Viral Video) হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছুটিতে পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরোও পড়ুন : সন্দেশখালি গণধর্ষণ কাণ্ডে নতুন মোড়! বিরাট নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট

কিন্তু এর পিছনের আসল ঘটনা কী? আদৌ সত্যিই ছাত্র বিয়ে করলেন বিভাগীয় প্রধানকে? অধ্যাপিকা অবশ্য বলছেন, এটা ফেশার্স পার্টির নাটকের অংশ। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় (MAKAUT) কর্তৃপক্ষের দাবি অবশ্য অন্য। কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটা একটা সাইকোলজিক্যাল ড্রামা, প্রজেক্টের অংশ। পাশাপাশি, তারা আগে থেকে কিছু জানতেন না বলেই উল্লেখ করেছেন।

Makaut marriage viral video

এই পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের তরফে পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এটা আমার চিন্তার বাইরে। জীবনে এসব শুনিনি, দেখিনি। আমি অল রেডি ম্যারেড। বিয়ে একটা পবিত্র বিষয়। সেটাকে নিয়ে এই বলা, যেখানে বাচ্চারা কেউ ওড়না নিয়ে আসছে, কেউ রং, আবির নিয়ে আসছে… সেটাকে বাজেভাবে প্রস্তুত করা, চিন্তার বাইরে।”

আরোও পড়ুন : বড় খবর! ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই UPI পেমেন্টের নিয়মে বিরাট বদল! এখনই নিন জেনে

পাশাপাশি অধ্যাপিকার আরোও সংযোজন যে, “ফ্রেশার্স পার্টিতে অনেক কিছুই হয়। নাচ হয়, গান হয়, নাটক হয়। সেখানে নাটকের একটা অংশকে ভাইরাল করেছে কেউ, সেটা নোংরা ব্যাপার। আমারও চরিত্রহনন হচ্ছে। বাচ্চাগুলোরও কেরিয়ার রয়েছে।” তবে দ্বন্দ্ব একটা বিষয়ে থেকেই যাচ্ছে। কারণ অধ্যাপিকা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্যের কোন মিলই নেই।

ম্যাকউটের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের রেজিস্ট্রার পার্থপ্রতিম লাহিড়ি বলেন যে, “আমরা একটু হতচকিত হয়ে গিয়েছি। কারণ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতায় এই ধরনের ঘটনা দেখিনি কখনও। অধ্যাপিকাকে কম্পালসরি লিভে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে HOD-র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” সবমিলিয়ে বলা যায়, বিষয়টি সামনে আসতেই স্তম্ভিত শিক্ষাবিদরাও।

 

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর