বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমানে মলদ্বীপের (Maldives) অর্থনীতি মারাত্মক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই দেশের ক্রমবর্ধমান ঋণ ও আর্থিক অস্থিতিশীলতা বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে। মূলত, মুইজ্জু সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মলদ্বীপের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। জানিয়ে রাখি যে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে “চিনপন্থী” হিসেবে বিবেচিত করা হয়। ইতিমধ্যেই তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চিনের পক্ষ নিয়েছেন।
চরম সঙ্কটের সম্মুখীন মলদ্বীপ (Maldives):
কিন্তু, এই অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেই চিনের কুদৃষ্টি মলদ্বীপের (Maldives) অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে। কারণ, মলদ্বীপকে ঋণ দিয়ে ক্রমাগত দুর্বল করে দিচ্ছে চিন। এর ফলে চিনের ওপর মালদ্বীপের অর্থনৈতিক নির্ভরতা ক্রমাগত বাড়ছে। এই বছরের শুরুতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তথা IMF মলদ্বীপকে সতর্ক করেছিল যে চিন থেকে আরও ঋণ নেওয়া দেশটির অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হতে পারে। পাশাপাশি, IMF পরামর্শ দিয়েছিল যে, মলদ্বীপের অর্থনৈতিক সঙ্কট এড়াতে রাজস্ব বৃদ্ধি, ব্যয় হ্রাস এবং বহিরাগত ঋণ কমানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এরই মধ্যে মলদ্বীপের (Maldives) অর্থনীতির ওপর আরেক বিপদের পাহাড় নেমে এসেছে। মূলত, মার্কিন ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ মলদ্বীপের ক্রেডিট রেটিংকে হ্রাস করে “CC”-তে নামিয়ে দিয়েছে। যা দেশটির বাহ্যিক ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নিয়ে গভীর সন্দেহের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে, এই পতনের আগে গত জুন মাসে এই রেটিং “CCC+”-এ দাঁড়িয়েছিল। ফিচ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে যে মলদ্বীপের ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ এবং বহিরাগত ফান্ডিং পেতে অসুবিধা এই রেটিং হ্রাসের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭৮ বছরে এই প্রথম! এবার বিরাট নজির গড়তে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, জানলে হয়ে যাবেন “থ”
ফিচের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মলদ্বীপে (Maldives) সরকারি বিনিয়োগ এবং আমদানির ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব বজায় থাকবে। এর ফলে মার্কিন ডলারের ঘাটতি বাড়বে এবং বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারের ওপর চাপ পড়বে। যা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতাকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে। এছাড়াও, ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপ (BML) রুফিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার লেনদেন স্থগিত করেছে। যার কারণে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাতেও সঙ্কটের প্রভাব ক্রমশ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: “ধর্ষণের সময়….”, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে কবিতা লিখে জেলে গেলেন পাক ব্লগার, উত্তাল পাকিস্তান
এদিকে, ফিচ সতর্ক করে জানিয়েছে যে, বিদেশি সাহায্য প্রাপ্তির কোনও নিশ্চয়তা নেই। পাশাপাশি, এটির সমাধান হতে পারে মধ্য মেয়াদে সরকারের আর্থিক সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করলে। কিন্তু ফিচ বিশ্বাস করে যে ক্রমবর্ধমান পাবলিক ঋণ এবং আর্থিক একত্রীকরণের অভাব মলদ্বীপের (Maldives) জন্য আর্থিক সহায়তা প্রাপ্ত করা কঠিন করে তুলতে পারে। এখন এই সঙ্কট থেকে মলদ্বীপের অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে চিনের ঋণে জর্জরিত অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করাই এখন মলদ্বীপ সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায়, মুইজ্জু সরকার কীভাবে এই সঙ্কট মোকাবিলা করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।