বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের চর্চার শিরোনামে তৃণমূলের ‘বিদ্রোহী’ নেতা হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। মুর্শিদাবাদ তথা রাজ্য-রাজনীতিতে তার মতো নেতার সংখ্যা সত্যিই কম। মিডিয়ার সামনে তার মুখে ফোটে খই। সম্প্রতি দলের তরফে শো-কজ়ের চিঠি পেয়েছেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের এই তৃণমূল বিধায়ক। আর এবার মমতা-অভিষেক (Mamata Banerjee-Abhishek Banerjee) দুজনার কাছেই জোর ধমক খেলেন নেতা। তবে ওই যে ‘স্বভাব যায় না মলে’।
লোকসভা ভোটের আবহে শুক্রবার মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে বসেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা। মুর্শিদাবাদের নেতানেত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিত হন হুমায়ুন কবীরও। সেই বৈঠকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিরস্কৃত হন বিধায়ক।
বৈঠকে সকলের সামনেই ভর্ৎসনার সুরে মমতা কবীরকে বলেন‘‘তুমি প্রেসের (সংবাদমাধ্যম) সামনে দলের ব্যাপারে একটু কম কথা বল।’’ তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই বিষয়ে সতর্ক করেন তাকে। তবে কোথায় কী! নেত্রীকে কথা দিয়েছিলেন তিনি মিডিয়ার সামনে আর মুখ খুলবেন না। এদিকে বৈঠক শেষে বাইরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে বিধায়ক।
সূত্রের খবর এদিন বৈঠকে বিধায়কের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক। মিডিয়ার সামনে দল সম্পর্কে করা মন্তব্য নিয়েও তাকে সতর্ক করেন অভিষেক। যদিও জোড়া ধমক খেয়ে বিধায়ক বলেন, তিনি নিজে থেকে কথা বলেন না। সংবাদমাধ্যমই তাকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে। এরই মধ্যে কবীরকে ধমক দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘তুমি বড্ড বেশি কথা বলছ।’’ দলের প্রধান আরও বলেন, “তুমি একটু কম কথা বলো। মিডিয়াকে সব বলা বন্ধ করো।’’
দল সূত্রে খবর, বৈঠকে নাকি অভিষেক কারও নাম না করেই বলেন‘‘জেলায় ভাল ফল হচ্ছে। পঞ্চায়েতেও জিতেছি। কিন্তু কিছু কিছু নেতা যদি ভাবেন জিতে মৌরসিপাট্টা জমাবেন, তাহলে ভুল ভাবছেন।’’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে বিধায়কের সঙ্গে তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের সংঘাত সামনে আসে। আগে থেকেই পঞ্চায়েতের প্রার্থী নিয়ে হুমায়ুনের মনে ক্ষোভ ছিল। এরপরই মনোনয়ন পর্ব প্রত্যাহারের শেষ দিনে সেই প্রার্থী শাওনি সিংহ রায়কে কড়া হুঁশিয়ারি দেন নেতা। এমনকি চাঁচাছোলা ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীকেও আক্রমণ করেন।
তার আগে খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র’ বলে তোপ দেগেছেন হুমায়ুন। আর তারপর থেকে দলের অধিকাংশের কাছেই চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন তিনি। ওদিকে বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীনও প্রশ্নোত্তর পর্বে দলের নীতি -বিরোধী কথা শোনা যায় বিধায়কের মুখে। হুমায়ুনকে দলের তরফে শো-কজ়ের চিঠিও হয়। এরপর অবশ্য হুমায়ুনও কিছুটা শান্ত হয়।
আরও পড়ুন: হুগলির শিল্পা নন্দীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! জানেন কে এই মহিলা?
এরই মধ্যে গতকালের বৈঠকে মুখ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় নেতাকে। তবে দেখা যায় বৈঠক থেকে বেরিয়েই মিডিয়ার সামনে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা যদি লোকসভা ভোটে সবাই একজোটে হয় কাজ করি তবে মুর্শিদাবাদের তিনটি আসনই আমরা পাব।’’ দলের বিরুদ্ধে কোনও কথা না বললেও ফের সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন হুমায়ুন।