বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতকাল নন্দীগ্রামের পর আজ পুরুলিয়ায় শক্তি প্রদর্শন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখান থেকে তিনি বিজেপিকে একের পর এক কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। সভা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকাই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। তিনি জনতাকে ধমক দিয়ে বসতে বলেন। তিনি এই বলেন যে, কয়েকজন মানুষ প্রতিটি সভায় গিয়ে এরকম বদমাইশি করছে।
‘তিনি বলেন, এদের শিখিয়ে নিয়ে আসে কেউ। আপনার বক্তব্য থাকলে কাগজে লিখে নিয়ে আসবেন। মিটিংয়ের মধ্যে ডিস্টার্ব করবেন না, ১ লক্ষ লোকের মাঝে ১০ জন। বসুন।” এরপর মঞ্চে থাকা দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই তোমরা দেখে রাখবে তো এবার মিটিংয়ে, প্রত্যেকটা মিটিংয়ে এসব করা এখন নেশা হয়ে গিয়েছে। মিটিংয়ে এসে এসব বললে আমি একটা কাজও করব না।”
এরপর আবার তিনি বলেন, ‘আপনাকে এভাবে মিটিং নষ্ট করার অধিকার কে দিয়েছে? বসুন। পোষায় আর না! যতই দাও, ততই চাই। আপনি চাইতেই পারেন, আমার কোনও আপত্তি নেই। একটা দেবার সিস্টেম আছে তো? একটা চিঠি লিখুন। চিঠি লিখে চিঠিটা পাঠিয়ে দিন। আমরা কখনো বলিনা যে চিঠিটা আমরা নেব না। এরা কারা? কারা এরা? ICDS? আমি তো বুঝতেও পারছি না! who are these people? এই কেউ জেনে বলত কি ব্যাপার?” তিনি বলেন, আমার মিটিংয়ে ডিস্টার্ব করলে আমি করলেও করব না। আমি এদিকে ভীষণ টাফ। পাবলিক মিটিংয়ে এসে ডিস্টার্ব করলে আমি কিন্তু অ্যাকশন নেব। অন্য কারোর মিটিংয়ে করতে পারতেন আপনারা? প্রতিদিন আমার মিটিংয়ে বিজেপি শিখিয়ে দিচ্ছে, আর করছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অমিত শাহের কথায় সার্ভে পাল্টে দিয়েছে ওঁরা। অমিত শাহ বলে দিয়েছে কি দেখাতে হবে আর কি দেখাতে হবে না। উনিই বলে দিয়েছেন যে তোমরা বল তৃণমূল ১৫৮ টা আসন পাবে। আর বিজেপি ৯২ টা আসন পাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কীসের সংবাদমাধ্যম? এদের ক্ষমতা আছে পুলওয়ামা নিয়ে কথা বলার?
এরপর তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম যখন বলবে যে তৃণমূল কম আসন পাচ্ছে, তখন মনে রাখবেন তৃণমূল চার গুণ বেশি আসন পাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিজেপি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে ফেক ভিডিও ছড়ায়। ওদের কথা একদম বিশ্বাস করবেন না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি আসলে পুরুলিয়া আর পুরুলিয়া থাকবে না। রূপসী বাংলা থাকবে না। আবারও মাওবাদীদের উপদ্রব বাড়বে। বিজেপি মাওবাদীদের থেকেও ভয়ংকর। তিনি বলেন, আপনারা যাকে ভোট দিয়েছেন, তিনি আপনাদের ভোট নিয়ে দিল্লী পালিয়েছে। কোভিডের সময় ওঁরা আপনাদের দিকে তাকিয়েছে কি?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি কুরমালি ভাষা জানি, কুড়ূক ভাষাও জানি। তিনি বলেন, আমি পুরুলিয়া নিয়ে বিশেষ কিছু জানতাম না। আজ সকালে একটা বই পড়ে জানলাম যে পুরুলিয়াতে ভাষা নিয়ে একটা আন্দোলন হয়েছিল। পুরুলিয়ার উপর একটা ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই নিয়ে অনেক প্রতিবাদও হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা অলিচিকি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি আর আদিবাসীদের জন্য একটি ভাষা অ্যাকাডেমিও তৈরি করে দিয়েছি। তিনি বলেন, বিজেপি বাঁশ হয়ে ঢোকে আর ফাল হয়ে বের হয়। কোবরা, কেউটের থেকে বিষধর বিজেপি। ভোট এলেই এদের শুধু বাংলার কথা মনে পড়ে। এরা পুরুলিয়া, ঝালদা, অয্যোধ্যা কিছুই জানে না।