বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুর-পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে খচে লাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার বৈঠকের শুরুতেই এই নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। কোথাও রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে, কোথাও আবার আলো জ্বলছে না। কোনও জায়গায় আবার বর্জ্য নিকাশি ব্যবস্থার হাল খারাপ। এমনকি টাকার পরিবর্তে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এবার এসব নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ মমতা।
পুর-পরিষেবার বেহাল দশা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘আমায় রাস্তা ঝাঁট দিতে হবে?’ এমনকি কাজ না করা হলে পুরসভাকে (Municipality) ‘পেনাল্টি’ করার নির্দেশও দেন তিনি। এদিনের বৈঠকের শুরুতেই হাওড়ার পুরনিগমকে তোপ দাগেন মমতা। তিনি বলেন, রথীন চক্রবর্তী পুরচেয়ারম্যান থাকাকালীন ‘বারোটা বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছেন’। এমনকি অর্থের বিনিময়ে ওখানে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেত্রী।
আজকের বৈঠকে জল থেকে শুরু করে বর্জ্য নিকাশি ব্যবস্থা, সবকিছু নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। হাওড়া পুরসভার পর বিধাননগরের সুজিত বসুকে নিশানা করেন তিনি। মিউনিসিপ্যালিটিতে যেভাবে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে তা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘পুরসভাগুলো জঘন্য পারফরম্যান্স। কেন তৈরি হয়েছিল জানি না। সবাই আলাদা পুরসভা করে দেওয়ার কথা বলে। জনতা যদি পরিষেবাই না পায়, তাহলে লাভটা কী?’
আরও পড়ুনঃ ঋণের দায়ে জর্জরিত বাংলা, তাই স্কুলকে অপচয় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে! বিস্ফোরক শুভেন্দু
এরপর জল, আলোর অপচয় নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে রাস্তায় আলো জ্বলছে। ভাবছে, টাকা তো সরকার দেবে। কোথা থেকে আসছে সেই টাকা? এটা তো জনগণের টাকা। জল পড়েই যাচ্ছে। তবে কিছু লোকের অভ্যেস রয়েছে ঢাকনা করে দিলেও সেটা করে খুলে বিক্রি করে দেয়। তাহলে কেন আমরা অটোমেটিক পদ্ধতিতে যাব না?’
এদিন টেন্ডারের মাধ্যমে আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। যেহেতু টেন্ডারের মাধ্যমে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাই এবার থেকে স্থানীয়ভাবে টেন্ডার বন্দ করে কেন্দ্রীয়ভাবে টেন্ডারের কথা বলেছেন মমতা। পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। এদিন জেলা শাসক, বিডিওদের নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গেই পুলিশকে ‘রঙ’ না দেখে অ্যাকশন নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পানীয় জল, বর্জ্য নিকাশি, হাউসিং, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কোন পুরসভা ভালো এবং কোন পুরসভা খারাপ তা নিয়ে ‘রিপোর্ট কার্ড’ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আমি কোনও রকম অবহেলা শুনব না। পারফরম্যান্স রিভিউ হবে। প্রচুর ভদ্রতা দেখিয়েছি। তবে ভদ্রতা দেখা মানে এটা নয় যে একতরফা গায়ের জোরে জমি দখল হবে, কাজ হবে না’। মানুষ যদি উন্নয়নের পরিষেবা না পায় তাহলে সব পুরসভা, পঞ্চায়েত তুলে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।