বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) মধ্যে সংঘাত চরমে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন অমর্ত্য সেন। বর্তমানে অমর্ত্যবাবু তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়িতে রয়েছেন। আজ তাঁর বাড়ি ‘প্রতীচী’তে পৌঁছে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একইসঙ্গে অধ্যাপকের বাড়িতে বিশ্বভারতীর জমির নথিপত্রও নিয়ে গেলেন। অমর্ত্যবাবুকে তিনি বলেন, “জমির নথি সঙ্গে নিয়ে এসেছি। কী করবে করুক!” একইসঙ্গে তাঁর জন্য জেড প্লাস নিরাপত্তার ঘোষণাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বীরভূম সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়েই সোনাঝুড়ির হাট ঘুরে ‘প্রতীচী’তে যান মমতা। সেখানে তিনি বলেন, “অনেক দিন ধরে দেখছি। আজ সব নথি সঙ্গে নিয়ে এসেছি। বিনা পয়সায় জমি পেয়ে আবার খবরদারি করছে!” একইসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “আমি এর শেষ দেখেই ছাড়ব।”
এ দিন বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদের হাতে কিছু সরকারি নথিও তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে কাগজপত্রগুলি অথেন্টিকেট করার নির্দেশ দেন। অমর্ত্য সেনকে ব্যক্তি আক্রমণ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আমার ভীষণ গায়ে লেগেছে। যে ভাবে ওনাকে আক্রমণ করা হয়েছে, তাতে গোটা বাংলাই আহত হয়েছে।” একইসঙ্গে অমর্ত্যবাবুকে এসব নিয়ে মাথা না ঘামানোর পরামর্শও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে জমি বিবাদটি কী নিয়ে? সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি সরকারি নথি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, অমর্ত্য সেনের বাবা প্রয়াত আশুতোষ সেনকে শান্তিনিকেতনের ১.৩৮ একর জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেওয়া হয়েছিল। তবে বিশ্বভারতীর তরফে দাবি, ১.৩৮ একর নয়, ১৯৪৩ সালের চুক্তি অনুযায়ী, আশুতোষকে ১.২৫ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। দু’টি চিঠি দিয়ে অমর্ত্যবাবুকে এই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, ১৩ শতক জমি ‘অবৈধ’ ভাবে দখল করে রেখেছেন অমর্ত্যবাবু। এদিকে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে দাবি, সেন পরিবারকে ১.২৫ একর জমি লিজ দেওয়ার সপক্ষে কোনও রেকর্ড নেই। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে নোবেলজয়ীকে ব্যক্তি আক্রমণ করেছে বিজেপি। তবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। শনিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, “অমর্ত্যবাবু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছে বলেই বিজেপির গায়ে এত জ্বালা ধরেছে।”