খুল্লামখুল্লা গুন্ডাগিরি, উত্তরপ্রদেশে আইনের শাসন নেই! আতিক খুনে ক্ষোভে ফুঁসছেন মমতা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শনিবার উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) প্রয়াগরাজে যোগী পুলিশ, মিডিয়ার সামনেই এনকাউন্টারে খুন হয়েছে ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ (Atiq Ahmed) ও তাঁর ভাই আসরফ। ঘটনা ঘিরে উত্তাল গোটা দেশ। এবার এই নিয়েই ঝাঁঝালো প্রতিক্রিয়া জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায় যোগী রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।

এদিন বিজেপি সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে নৈরাজ্য এবং আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার ছবি দেখে আমি স্তম্ভিত। এটা চূড়ান্ত লজ্জার যে, অপরাধীরা পুলিশ এবং সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। সাংবিধানিক গণতন্ত্রে এই ধরনের বেআইনি কাজের কোনও জায়গা নেই।’’

প্রসঙ্গত, শুধু মমতায় নয় প্রয়াগরাজে আতিক-হত্যাকাণ্ডের খবর আসার পর থেকে বিজেপির বিরুদ্দে একজোটে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে বিরোধীরা। যোগী সরকার ও প্রশাসনের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, “পুলিশি হেফাজতের মধ্যে আবার ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ড। গোটা রাজ্যের সব জেলায় ১৪৪ ধারা। উত্তরপ্রদেশে ৩৫৬ ধারার পরিস্থিতি কি হয়নি? বিজেপি কী বলে???”

পাশাপাশি মোদী ও যোগী শাসনের ওপর প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। শাসকদলের মন্ত্রীর অভিযোগ, যোগী পুলিশই দুষ্কৃতীদের সুযোগ করে দিয়েছিল আতিককে মারার জন্য। মাফিয়া হত্যার ঘটনায় বিজেপি সহ যোগী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, অখিলেশ যাদব, জয়ন্ত চৌধুরীরাও। এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেছেন, শনিবার রাতে দুটো খুন হয়েছে। এক, আতিক আহমেদ ও আশরাফ। এবং দুই, আইনের শাসন।

ভয়ানক ঘটনার পর শনিবার রাতেই হন্যে হয়ে খুনিদের খোঁজ চলেছে। জানা গিয়েছে গতকাল রাতেই, সানি, লাভলেশ, অরুণ নামের তিন আততায়ীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের এখনও জেরা করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল দুষ্কৃতীরা।

সংক্ষেপে গতকালের ঘটনা: গ্যাংস্টার থেকে নেতা হয়ে ওঠা আতিক ও তাঁর ভাই জেলবন্দি ছিলেন। শনিবার প্রয়াগরাজের এক হাসপাতালে তাদের ২ জনকে নিয়ে আসা হচ্ছিল মেডিক্যাল টেস্ট করার জন্য। পথেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁরা। দুজনকেই একের পর এক প্রশ্ন করছিলেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। ছেলে হারানোর শোকে কাতর বাবা তাঁদের প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছিলেন।

atiq ahmed

হাত বাঁধা অবস্থায় দুই বন্দিকে ভিড় ঠেলে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিস। সেই সময়েই মিডিয়া, পুলিশ সকলের চোখের সামনে ঘটে গেল ভয়ংকর ঘটনা। চলল গুলির পর গুলি। একজন এসে ফিল্মি কায়দায় মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আতিককে খুন করে। পরক্ষনেই আতিকের ভাই কেউ অন্য একজন গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলি করার পর ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন ঘটনাস্থলে থাকা আতিকের আইনজীবী। গোটা এই খুনের ঘটনা লাইভ সম্প্রচারিত হয় টিভিতে।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর